ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

শনিবার নতুন বই এসেছে ২৪২টি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:২৮  
আপডেট :
 ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:০৮

শনিবার নতুন বই এসেছে ২৪২টি

বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ শুরু হয়েছে ২১ দিন। এর মধ্যে শনিবার নতুন বই এসেছে ২৪২টি। ২১ দিনে নতুন বই এসেছে মোট তিন হাজার ৬৩১টি। গতবারের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী মেলা চলছে। ২ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায় মেলার শেষের দিকে দর্শনার্থী ও বইপ্রেমীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশির ভাগেরই চোখ নতুন বইয়ের দিকে। এরইমধ্যে শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিনেই নতুন বই এসেছে ৫০৮টি।

এবারও বইমেলায় নবীন লেখকদের বই বিক্রির শীর্ষে থাকছে। বইমেলা শেষ হবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি। আগামী এক সপ্তাহেও মেলায় আসবে নতুন বই।

এবারের মেলায় নতুন কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এবার নতুন থিম নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তা হলো বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। গ্রন্থমেলা বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে মেলার আঙ্গিক ও সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে অনেক স্থাপনা করা হয়েছে। মেলার বিভিন্ন অংশ বঙ্গবন্ধুকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে তার জীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র ফুটে ওঠে। মেলার উভয় অংশে তিনটি তথ্যকেন্দ্রে রয়েছে। দুটি সোহরাওয়ার্দীতে ও একটি একাডেমি প্রাঙ্গণে। ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ এবার বর্ধিত পরিসরে স্থাপন করা হয়েছে।

শিশু চত্বর বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। শিশুপ্রহরের দিনগুলোতে ‘তারুণ্যের বই’ ব্যানারে শিশু-কিশোরদের বই পাঠে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

নামাজ ঘর ও টয়লেট ব্যবস্থা সম্প্রসারিত ও উন্নত করা হয়েছে মেলায়। মহিলাদের জন্য সম্প্রসারিত নামাজ ঘর রয়েছে। পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কাছে একটি ব্রেস্টফিডিং কর্নার রয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও হুইল চেয়ার সেবা রয়েছে। তবে গতবারের চেয়ে বেশি সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবী এ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এবার হুইল চেয়ারের সংখ্যা বাড়বে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে দুটি ফুডকোর্ট রয়েছে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা— তার সূচনা একদিনে হয়নি। বাংলাদেশে বইমেলার সূচনা হয় স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই—১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, মুক্তধারা প্রকাশনীর কর্ণধার চিত্তরঞ্জন সাহার উদ্যোগে। ১৯৭২–এ চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণের বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর কলকাতা থেকে আনা ৩২টি বই সাজিয়ে গোড়াপত্তন করেন এই বইমেলার।

বলা ভালো, এই ৩২টি বই–ই ছিলো চিত্তরঞ্জন সাহা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ— বর্তমান মুক্তধারা প্রকাশনী—থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের শরণার্থী লেখকদের লেখা। অনেকের মতে, এই বইগুলো স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকাশনাশিল্পেরও প্রথম দিককার প্রকাশনা।

১৯৭২ থেকে ১৯৭৬— পর্যন্ত একাই বইমেলা চালিয়ে যান চিত্তরঞ্জন সাহা। তার দেখাদেখি ১৯৭৭–এ অণুপ্রাণিত হলেন অন্যরা। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক লোকসংস্কৃতিবিদ আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে মেলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করেন। আর ১৯৭৯ সালে মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। চিত্তরঞ্জন সাহা এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা।

তখনো অবশ্য এ মেলার নাম আমর একুশে বইমেলা ছিলো না। ১৯৮৩–তে মনজুরে মওলা যখন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, সে সময়েই তিনি একাডেমিতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন সম্পন্ন করেন। তবে বিধি বাম। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে ট্রাক তুলে দেওয়ায় ওই বছর আর বইমেলা করা সম্ভব হয়নি। এর পরের বছর ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাড়ম্বরে উদ্বোধন ঘটল আজকের ‘অমর একুশে বইমেলা’র।

সে সময় থেকে ২০১৩ সাল অব্দি বইমেলা হতো কেবল বাংলা একাডেমিতেই। ২০১৪ থেকে একে পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে অমর একুশে বইমেলা এখন হয়ে উঠেছে বাঙালির প্রাণের মেলা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত