ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

মাদরাসার সভাপতি হতে রেজুলেশন বহি ছিনতাই

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৫:০৩

মাদরাসার সভাপতি হতে রেজুলেশন বহি ছিনতাই

লালমনিরহাটে একটি ফাজিল মাদরাসার সভাপতি হতে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে রেজুলেশন বহি ছিনিয়ে নেয়ার দায়ে সাবেক অভিভাবক সদস্য আনছারুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা দলগ্রাম একরামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ (ভারঃ) মোঃ নুরুজ্জামান এ অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযুক্ত অভিভাবক সদস্য আনছারুল ইসলাম উপজেলার দক্ষিণ দলগ্রাম এলাকার মৃত ছানাউদ্দিনের ছেলে।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার চলবলা ও দলগ্রাম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তি গ্রামে ১৯৬৪ সালে চলবলা দলগ্রাম একরামিয়া মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পর্যায়ক্রমে সেখানে এবতেদায়ী থেকে ফাজিল স্তর পর্যন্ত পাঠদানের সুযোগ তৈরী হয়। ২০১৬ সালে অধ্যক্ষ এমদাদুল হক অবসর গ্রহণ করলে শুরু হয় ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান উপাধ্যক্ষ মইনুল হাসান কারিমী। তিনিও ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করলে দ্বন্দ্ব আরো প্রকট আকার ধারণ করে।

সমর্থন না থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক সদস্য আনছারুল ইসলাম নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করে মাদরাসার যাবতীয় কাগজপত্র কুক্ষিগত করেন। এ নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট পর্যন্ত মামলা মোকদ্দমা চলে।

পূর্বের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অবসর নেয়ার পরদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব বুঝে দেন মাদরাসাটির সিনিয়র প্রভাষক মোঃ নুরুজ্জামানকে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র সদস্য আনছারুল ইসলামের কাছে থাকায় প্রতিষ্ঠানের কোনো কাগজপত্র বুঝিয়ে দিতে পারেননি। এরই মাঝে গত ৭ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করে নতুন এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন সাবেক কমিটির সদস্য আনছারুল ইসলাম।

পূর্বের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কাগজপত্র বুঝে দিতে নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সভা আহ্বান করেন। সেখানে সাবেক সদস্য আনছারুল ইসলাম দলবল নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশন বহি নিতে জোরপূর্বক সকলের স্বাক্ষর নিয়ে পুনরায় রেজুলেশন বহি নিয়ে চম্পট দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাবেক সদস্য আনছারুল ইসলাম ও তার তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ নুরুজ্জামান।

অভিযুক্ত আনছারুল ইসলাম বলেন, পূর্বের অধ্যক্ষের কিছু অনিয়মের প্রমাণ থাকায় রেজুলেশন বহিটি বাকী সদস্যরা আমাকে সভাপতি হিসেবে জমা দিয়েছেন। গত শনিবারের সভায় নিয়ে গিয়ে পুনরায় চলে এসেছি। জোর করে স্বাক্ষর করে নেইনি।

চলবলা দলগ্রাম একরামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ (ভারঃ) মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, সভায় দলবল নিয়ে আনছারুল প্রবেশ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে এডহক কমিটির সভাপতিকে নিয়ে বিদ্রুপ করে চলে যান। জীবন বাঁচাতে সকলেই স্বাক্ষর করেছি। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র পাইনি।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাদরাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভায় আনছারুল নামে একজন রেজুলেশন বহিতে জোরপূর্বক সকলের স্বাক্ষর নিয়ে বহিটি ছিনিয়ে নেন বলে শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত