ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

লুঙ্গি পরেই অফিস করেন রেল কর্মকর্তা!

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৫৩

লুঙ্গি পরেই অফিস করেন রেল কর্মকর্তা!

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে লুঙ্গি পরেই নিয়মিত অফিস করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে রেল স্টেশনের কর্মকর্তা (স্টেশন মাস্টার) মো. মারুফ হোসেনের বিরুদ্ধে।

রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সহকারি স্টেশন মাস্টারের কক্ষে তিনি দায়িত্বরত কর্মকর্তার চেয়ারে লুঙ্গি পরেই বসে আছেন এবং ট্রেনের টিকেট বিক্রিসহ নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

প্রথমে অন্য কোন কর্মকর্তা ভাবলেও পরে মো. মারুফ হোসেনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়, তিনিই স্টেশন মাস্টার এবং লুঙ্গি পরেই তিনি অফিস করছেন।

এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে সরকারিভাবে নির্ধারিত যাতায়াত ভাড়ার অতিরিক্ত মূল্যে ট্রেনের টিকেট বিক্রি, রেলওয়ের গোডাউন ভাড়া দেওয়া এবং রেলের সম্পত্তি রক্ষণা-বেক্ষণের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, স্টেশন মাস্টার মারুফ হোসেন লুঙ্গি পরেই নিয়মিত অফিস করেন। দূরপাল্লার টিকেটে (লাকসাম-চট্টগ্রাম) ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি রাখেন।

গত কয়েক মাস যাবত রেলের গোডাউন ভাড়া দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। রেলে সম্পত্তি (ভূমি) চাষের জন্য ইজারা এনে স্থানীয়রা ঘর নির্মাণ করছেন। অথচ তিনি এ বিষয়ে কোন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মারুফ হোসেন মার্জিত পোশাক তো দূরে থাক একেবারে বাসার পোশাকেই অফিস করছেন এবং আরাম আয়েসেই তার দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অর্থাৎ নিজের অফিসকে অনেকটা বাসস্থানের মতো তৈরি করে রেখেছেন।

তার সঙ্গে কথা বলার সময়ে লুঙ্গি পরা পোশাকেই সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় একজন যাত্রী ট্রেনের টিকেট ফেরৎ দিতে এসেছেন। তিনি চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য ২৬০ টাকা দিয়ে একটি টিকেট ক্রয় করেন। যার সরকারিভাবে নির্ধারিত ফি ২২০ টাকা ছিল।

অথচ নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত মূল্যে ট্রেনের টিকেট বিক্রির সুযোগ নেই। মার্জিত পোশাকেই অফিসে আসতে হয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। কারণ, সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট ড্রেস কোড রয়েছে এবং তা-মেনেই তাদের অফিস করার বিধান রয়েছে।

এই সম্পর্কে জানতে চাইলে মারুফ হোসেন কোন জবাব দেননি। পোশাকের বিষয়ে তিনি বলন, আমি একা মানুষ। সবকিছু আমাকেই দেখতে হয়। এখন দুপুর বেলা, গোসল করতে যাবো। তাই লুঙ্গি পরা অবস্থায় আছি।

গোডাউন ভাড়ার বিষয়ে মারুফ হোসেন বলেন, গোডাউন ভাড়া দেওয়া হয়নি। রেল লাইনের কাজ চলমান রয়েছে। যিনি (ঠিকাদার) কাজ পেয়েছেন। তার মালামাল গোডাউনে রাখা হয়েছে।

ভূমি রক্ষণা-বেক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা রেলের সম্পত্তি দখলে আছেন, তারা ইজারা নিয়েছেন।

শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য ইজারা, দোকান-ঘর নির্মাণের জন্য নয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে তিনি কোন ডকুমেন্ট (লিখিত) দেখাতে পারেননি। এ সময় তিনি রেলের ১৭টি ডিপার্টমেন্ট (বিভাগ) রয়েছে বলে জানান।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিভিশনাল কমার্শিয়াল অফিসার (ডিসিও) আনসার আলীর বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এসব বিষয়ে পরিদর্শক পাঠিয়ে তদন্ত করা হবে। তার (মারুফ হোসেন) বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হলে, বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত