ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

একটি ভাঙা ঘরেই ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর ক্লাস

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২০, ২১:৫০  
আপডেট :
 ০১ মার্চ ২০২০, ২১:৫৫

একটি ভাঙা ঘরেই ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর ক্লাস

আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে গ্রামীণ জনপদের দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়ানোর প্রয়াসে ১৯৪০ সালের এক মহেন্দ্রক্ষণে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বদরপুর ও.এস দাখিল মাদ্রাসা। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব সীমানায় নারায়ণপুর ইউনিয়নের অজপাঁড়াগাঁয়ে অবস্থিত এ বিদ্যানিকেতনটি।

মাদ্রাসার অনার বোর্ডে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যার নামটি শোভা পাচ্ছে তিনি হলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী হযরত মাওলানা আলতাফ হোসেন (রামরার হুজুর)। এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়াতে আজকের বদরপুর ও.এস দাখিল মাদ্রাসা স্থাপিত হয়।

আসবাবপত্রের অভাব, শিক্ষক সংকট, শ্রেণিকক্ষের সমস্যাসহ নানা সমস্যায় আলোর মুখ দেখেনি ঐতিহ্যবাহী এই মাদ্রাসাটি। ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রায় ৮০ বছর গত হলেও সরকারি উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি এ মাদ্রাসায়।

লেখাপড়া ও ফলাফলের দিক থেকে অনেক সাফল্য থাকলেও নানা সমস্যাকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলছে দ্বীনি শিক্ষার এ বিদ্যানিকেতনটি। অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক সংকট, শ্রেণিকক্ষ সংকট ও আসবাবপত্রের অভাবসহ নানা সমস্যায় জর্জড়িত থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন সু-দৃষ্টি নেই মাদ্রাসাটির দিকে।

সরেজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ টিনসেড ঘরে প্রথম শ্রেণি থেকে দাখিল পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবনের এক কক্ষে চলছে অফিসের কার্যক্রম। অন্যকক্ষে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। পাশের আরেকটি জরাজীর্ণ টিনসেড ঘরে চলছে বাকী শ্রেণির কার্যক্রম। বিশেষ করে শ্রেণি কক্ষের সংকটের কারণে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস নিতেই বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা এ মাদ্রাসার ফলাফল বরাবর সন্তোষজনক হয়ে আসায় গত ১৯৮৬ সালের ১লা ডিসেম্বর মাদ্রাসাটিকে এমপিও ভূক্তিতে উন্নীত করা হয়।

মাদ্রাসার সুপার মো. আবুল কাশেম বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, শ্রেণি কক্ষের অভাবে পাঠদান করানো যাচ্ছে না। তাই এক কক্ষে একাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করাতে হচ্ছে। ভবনসহ মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি।

তিনি আরও জানান, গত ২০১৯ সালে সর্বশেষ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে পাকা ভবনের জন্য আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শরীফ উল্ল্যাহ পাটোয়ারি জিলন বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, ৮০ বছর পেরিয়ে গেলেও দ্বীনি শিক্ষার এ বিদ্যানিকেতনে প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে একেবারেই কম। অথচ এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করছেন অনেকেই। যার সুবিধাভোগী এই দেশ, জনগণ এবং সরকার। তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনির সু-দৃষ্টি কামনা করছি মাদ্রাসাটির উন্নয়নের জন্য।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম খান বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, মাদ্রাসার পাকা ভবনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করা হয়েছে। বর্তমানে ভবনের আবেদনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অচিরেই মাদ্রাসার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি সু-দৃষ্টি দিবেন বলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী আশা পোষণ করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত