ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় অটোচালককে পিটিয়ে হত্যা

  জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২০, ১৬:৪৬

বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় অটোচালককে পিটিয়ে হত্যা

বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় সোহাগ মিয়া (১৮) নামে এক অটোচালককে পিটিয়ে হত্যা করেছে মেয়ের চাচা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুর সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দুআনিপাড়া গ্রামে ঘটেছে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড।

পিটিয়ে হত্যার পর ওই অটোচালককে গলায় ফাঁস দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেবার পাঁয়তারা করছে প্রভাবশালীরা। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে নারায়ণপুর তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ।

দুআনিপাড়া গ্রামের মৃত নূরল ইসলামের স্ত্রী নিহত অটোচালকের মা কাঞ্চন বেওয়া (৫০) জানিয়েছেন, ২৫ মার্চ বিকেলে ওই গ্রামের আবুল কাশেম মাস্টারের ছেলে উজ্জ্বল মিয়ার কাছে তার ভাতিজীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় আমার ছেলে সোহাগ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিনই তাকে একদফা মারধর করে উজ্জ্বল। পরে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে উজ্জ্বল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাড়িতে এসে সোহাগকে আরেকদফা কিল-ঘুষি ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে মারে। সোহাগকে মেরে গলায় রশির ফাঁস দিয়ে বাড়ির পাশে গাছে ঝুলিয়ে দেয় তারা। আমরা গরিব। আমি স্থানীয় ব্রয়লারে কাজ করি ওই মেয়ের পরিবারের। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। হত্যাকারিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন নিহতের মা কাঞ্চন বেওয়া।

হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হক বাবু জানিয়েছেন, ২৫ তারিখে অটোবাইক চালক সোহাগের অটোতে ওঠে দুজন যাত্রী। এদের মধ্যে একজন উজ্জ্বলের ভাতিজী, আরেকজন ভাগ্নি। তাদেরকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে হাজীপুর বাজারে এসে উজ্জ্বলের কাছে তার ভাতিজীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সোহাগ। তারা সমাজে উচ্চবিত্ত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক হওয়ায় এ প্রস্তাবে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগকে সেদিন দু-একটা চড়-থাপ্পড় দেয় উজ্জ্বল। এ ঘটনার পর উজ্জ্বল ও তার বাবা স্থানীয় মাতুব্বর জহুরুল ইসলাম জহুকে বিষয়টি জানায়। জহুরুল ইসলাম জহুকে বিচার দেওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে উজ্জ্বলের পথরোধ করে সোহাগ ও তার বন্ধুরা। এতে দু'পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটিসহ উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আশেপাশের লোকজন এসে তাদেরকে থামিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

তিনি জানান, পরপর এমন ঘটনায় উজ্জ্বলের পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৭/৮টার দিকে সোহাগের বাড়িতে গিয়ে সোহাগকে কিল-ঘুষি-থাপ্পড়সহ মারধর করে। এসময় সোহাগের মা'কেও মারধর করা হয়। মারধরের পর সোহাগের মা ও তাদের কয়েকজন লোক আমার কাছে এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিচার চায়। রাত বেশি হওয়ায় আমি বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাকে পরেরদিন সকালে আসতে বলি। তারা বাড়িতে ফিরে দেখে যে, সোহাগ গাছের সঙ্গে ফাঁস টানিয়েছে। সোহাগকে স্থানীয় বাজারের ডাক্তারের কাছে আনা হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জামালপুর সদর থানার ওসি মো. সালেমুজ্জামান বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার এখনো কোনো অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত