পুলিশের লাঠিপেটা-হয়রানি, বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২০, ২০:৪০ আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২০, ২০:৫২
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়তে থাকায় এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রাস্তায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী কাজ করছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে মাস্ক না পরা বা বাইরে বের হওয়ার জন্য পুলিশের লাঠিপেটা, কান ধরে থাকার দৃশ্য স্থানীয় গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের এ ধরণের আচরণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফের একজন মুদি দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, গতকাল তিনি পুলিশের মার খেয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি সকালে বাসা থেকে বের হয়ে দোকানের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে টহলরত পুলিশ আমার দিকে তেড়ে আসে আমাকে বলে বাইরে বের হয়েছিস কেন? এই বলে আমাকে মারতে থাকে। তারা আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই মারে। আমি দোকানে যাচ্ছি, দোকান খোলার জন্য সেটা তো অন্যায় না। এখন আমার কাছে জানতে চেয়ে উত্তর তাদের মন মত না হলে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কিছু না শুনেই মারা শুরু করে। এ কেমন কথা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো দুইজন এমন ক্ষোভ জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সামাজিক দূরত্ব রাখা বা মানুষকে নিয়ম-কানুনের মধ্যে রাখার জন্য যেটা করছেন সেটার অবশ্যই ভালো দিকে আছে। কিন্তু অনেকে আছেন যারা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন।
তাদের কাছে আগে শুনতে হবে, দরকার পরলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তারা দেখতে চাইতে পারেন কিন্তু এভাবে কথা না শুনেই মারা বা হেনস্থা করা কাম্য নয়।
ফেরদৌস জাহান (ছদ্ম নাম) নামে একজন নারী একটি ব্যাংকে চাকরি করেন।
সব সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধের ঘোষণা হলেও ব্যাংকগুলোকে সীমিত আকারে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলেছে।
এখন ফেরদৌস জাহান বলছেন, তাকে অফিস করতে হচ্ছে। কিন্তু তিনি ভয় পাচ্ছেন রাস্তায় যেভাবে পুলিশ পেটাচ্ছে তাতে করে তিনি বের হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা যদি হেনস্থার শিকার হন।
বাংলাদেশ জার্নালে আরো পড়তে পারেন:
> দেশে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি
> লকডাউন: বাড়ি ফিরতে ছেলেকে কাঁধে নিয়ে ২ দিন হাঁটলেন যুবক
> করোনা প্রতিরোধে নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
> করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে যা বললেন চিকিৎসক
> করোনাভাইরাস: নাগরিকরা প্রত্যেকে পাবেন ১২ শ ডলার
> বিদেশী নাগরিকদের সহযোগিতার আশ্বাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
> যে ৭ রোগ থাকলে করোনা হলে আপনার ঝুঁকি বেশি
> করোনার সচেতনতায় এমনটা কেউ করেননি আগে
> দেশ লকডাউন হলেও মসজিদ বন্ধ করা যাবে না
> পিপিই ছাড়া চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা স্থগিত
> করোনাভাইরাসকে ‘অবহেলা’ করছেন ট্রাম্প
> করোনা নিয়ে গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা
> ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ৪৪ জন
> ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত
> গুজবে হবিগঞ্জবাসীর নির্ঘুম রাত
তিনি বলেন, যারা অফিস করতে বাধ্য, যেমন আমার মত তারা রাস্তাঘাটে পুলিশ পেটোয়া বাহিনী দিয়ে হেনস্থা হইলে তার দায়ভার নিবে কে?
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন ‘আর এই পেটুয়া বাহিনীর হাত থেকে নিস্তার পেতে কোন নম্বরে কল দিতে হবে সেটাও জানতে চাই’।
পুলিশ কী বলছে?
বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, বল প্রয়োগের ঘটনা বিচ্ছিন্ন ভাবে হয়ে থাকতে পারে। তবে তিনি বলে পুলিশ সেটা ‘একেবারেই প্রশ্রয় দিচ্ছে না। সারাদেশে মাঠ পর্যায়ে যেসব পুলিশ সদস্য কাজ করছেন তাদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, যাতে করে সম্মানিত নাগরিকদের সাথে বিনয়ের সাথে, পেশাদার আচরণ করা হয়, তাদেরকে বোঝানো হয় করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি এবং সচেতনতা সম্পর্কে।
তিনি আরো বলেন, তারপরেও পুলিশের কোন কোন সদস্যের দ্বারা এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঐসব এলাকার ইউনিট কমান্ডারদের বলেছি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
তবে সোহেল রানা বলেন যে, পুলিশের ‘দুই একজন সদস্যের এ'ধরণের আচরণ বাংলাদেশ পুলিশকে প্রতিনিধিত্ব করে না।’
পুলিশ বলছে দেশের এই জরুরী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের সর্বোচ্চ সচেতন থাকতে হবে। এবং সরকারের দেয়া নির্দেশ মেনে চলতে হবে।
জরুরি প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হচ্ছেন , এবং যেগুলো সরকারের নির্দেশের আওতামুক্ত তাদের ব্যাপারে পুলিশ সদস্যরা বাংলাদেশ পুলিশের দেয়া নির্দেশনা মেনে চলছেন। এবং এতে করে কোন নাগরিকের সমস্য হওয়ার কথা না বলে জানাচ্ছে সংস্থাটি। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে
আরো পড়ুন:
> হ্যান্ডওয়াশ মাস্ক দিচ্ছে সেনাবাহিনী
> করোনা পরিস্থিতি তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে
> করোনা ঠেকাতে তালপাতার মাস্ক ব্যবহার
> কোনো ধরনের জনসমাগম নয়: প্রধানমন্ত্রী
> করোনায় চিকিৎসক যুগলের অন্যন্য দৃষ্টান্ত
> করোনা একটি যুদ্ধ, আমাদের জিততে হবে
> করোনায় প্রাথমিকে ‘বার্তা’ পাঠাবে মন্ত্রণালয়
> করোনাভাইরাস: সাত উপায়ে থামবে ভুল তথ্য
> বিমানের দুটি ছাড়া সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ
> করোনা থেকে বাঁচতে ডেটল খেয়ে ৫৯ জনের মৃত্যু
> ঢাকার রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ, সাথে সেনাবাহিনী
> করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখছেন চিকিৎসকরা