করোনার পর বাংলাদেশে আসছে পঙ্গপাল! (ভিডিও)
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২০, ১৫:৩২ আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২০, ১৫:৩৯
আফ্রিকার কয়েকটি দেশের পর পাকিস্তান এবং সর্বশেষ ভারতে আক্রমণ চালানোর পর বাংলাদেশেও পঙ্গপালের আক্রমণ হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা বলছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে সে ঝুঁকি এ বছরের চেয়ে আগামী বছর বেশি।
গত বছরের শেষ দিক থেকে আফ্রিকার ইথিওপিয়া, কেনিয়া ও সোমালিয়াসহ কয়েকটি দেশে আক্রমণ চালিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে পঙ্গপাল। এ বছরের শুরুতে পাকিস্তানে পঙ্গপালের আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর জানা যায়।
পঙ্গপালের উৎপাতে দেশটিতে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা।
এরপর ভারতের পাঞ্জাবে ঢুকে পড়েছে পঙ্গপাল, যার ব্যাপ্তি ছিল তিন কিলোমিটার। সে প্রেক্ষাপটে পাঞ্জাবের আশেপাশের কয়েকটি রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় এবং এর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সংস্থা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক এজেডএম ছাব্বির ইবনে জাহান জানিয়েছেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোমবার তাদের একটি চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে পঙ্গপালের আক্রমণ সংক্রান্ত সতর্কতা এবং প্রস্তুতি রাখার জন্য।
তিনি বলেন, আমাদের আশঙ্কা পাকিস্তান ও ভারতের পর বাংলাদেশেও আসতে পারে এই পঙ্গপাল। তবে আমরা যতটা বুঝতে পারি এ বছরে তেমন ঝুঁকি নাই, কিন্তু আগামী বছরের জন্য আমাদের সতর্ক হতে হবে।
এর কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করছেন, যেহেতু পঙ্গপালের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বাতাসের উষ্ণতার গতি অনুযায়ী এরা চলাফেরা করে এবং এক জায়গার খাবার ফুরালেই নতুন জায়গার খোঁজ করে তারা, সে কারণে কৃষি অধিদপ্তরের আশঙ্কা বাংলাদেশেও আক্রমণ হতে পারে পঙ্গপালের।
জাহান জানিয়েছেন, পঙ্গপালের সম্ভাব্য আক্রমণ ঠেকানোর জন্য সরকার, জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (ফাও) এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তারা।
তবে তিনি জানিয়েছেন যে গত ৫৫ বছরের মধ্যে পঙ্গপালের আক্রমণ হয়নি এ অঞ্চলে।
যেহেতু এই পতঙ্গের ঝাঁক মরু এলাকা থেকে এসেছে, কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করেন বাংলাদেশে আক্রমণ হলে দেশের শুষ্ক ও খরা প্রবণ এলাকায় সে ঝুঁকি বেশি থাকবে।
বাংলাদেশ জার্নালে আরো পড়তে পারেন:
> লকডাউন: বাড়ি ফিরতে ছেলেকে কাঁধে নিয়ে ২ দিন হাঁটলেন যুবক
> করোনা প্রতিরোধে নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
> নাগরিকদের বাংলাদেশ ছাড়তে বলেছে ব্রিটিশ হাই কমিশন
> করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে যা বললেন চিকিৎসক
> করোনাভাইরাস: নাগরিকরা প্রত্যেকে পাবেন ১২ শ ডলার
> বিদেশী নাগরিকদের সহযোগিতার আশ্বাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
> প্রাথমিক শিক্ষকদের টিফিন ফি যাবে ‘করোনা ফান্ডে’
> যে ৭ রোগ থাকলে করোনা হলে আপনার ঝুঁকি বেশি
> করোনার সচেতনতায় এমনটা কেউ করেননি আগে
> চট্টগ্রামে ছাপা পত্রিকার বিক্রি কমেছে ৯০ শতাংশ
> দেশ লকডাউন হলেও মসজিদ বন্ধ করা যাবে না
> পিপিই ছাড়া চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা স্থগিত
> করোনাভাইরাসকে ‘অবহেলা’ করছেন ট্রাম্প
> করোনা দুশ্চিন্তায় জার্মান মন্ত্রীর আত্মহত্যা
> করোনা নিয়ে গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা
> খুব দ্রুত করোনার ‘ওষুধ’ আনছে জাপান
> ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত
পঙ্গপাল কী?
বিভিন্ন দেশের কৃষি বিভাগ এবং উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের কাছে ইংরেজি লোকাস্ট নামে পরিচিত এই পঙ্গপাল।
বাংলায় এর নাম পতঙ্গ, এটি এক জাতের ঘাসফড়িঙ।
স্বভাবে কিছুটা লাজুক প্রকৃতির ইঞ্চি খানেক দৈর্ঘ্যের এই পতঙ্গ, খাবারের জন্য নিজ প্রজাতির বিপুল সংখ্যক সদস্যের সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ায়।
সাধারণত একেক ঝাঁকে কয়েক লাখ থেকে এক হাজার কোটি পতঙ্গ থাকতে পারে। তখন একে পঙ্গপাল বলে।
কেন বিপজ্জনক?
পঙ্গপাল যখন ফসলের ক্ষেতে আক্রমণ করে, তখন তা একজন কৃষকের জন্য রীতিমত দুঃস্বপ্নের বিষয় হয়ে ওঠে।
একটি পূর্ণ বয়স্ক পঙ্গপাল প্রতিদিন তার ওজনের সমপরিমাণ খাদ্য খেতে পারে।
যে অঞ্চলে তারা আক্রমণ করে, সেখানে খাদ্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা অন্য অঞ্চলে যায় না।
উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে একা থাকলে পতঙ্গ বেশ নিরীহ প্রাণী, কিন্তু দলবদ্ধ অবস্থায় এরা হয়ে ওঠে বিধ্বংসী।
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন ফাও বলছে, এক বর্গকিলোমিটার আকারের পঙ্গপাল এক সঙ্গে যে খাবার খায় তা দিয়ে ৩৫ হাজার মানুষকে এক বছর খাওয়ানো সম্ভব।
একটি বড় পঙ্গপাল দিনে ১২০ মাইল পর্যন্ত জমির ফসল খেয়ে ফেলতে পারে।
কেবল খাবারই খায় না তারা, একই সঙ্গে প্রজননের কাজটিও করে।
গত বছরের শেষ দিকে আফ্রিকার সোমালিয়া, ইথিওপিয়া এবং কেনিয়াসহ কয়েকটি দেশে কৃষি ক্ষেতে আক্রমণ চালাচ্ছে পঙ্গপাল, যে কারণে সেসব দেশের কৃষকেরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
তবে ঐ অঞ্চলে পঙ্গপালের আক্রমণ নিয়মিত বিরতিতে হয়ে থাকে।
জাতিসংঘের হিসাবে পশ্চিম আফ্রিকায় ২০০৩-০৫ সাল পর্যন্ত সময়ে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের ফসলের ক্ষতি করে পঙ্গপাল।
জাতিসংঘের সতর্ক হবার আহ্বান
এ মাসের দশ তারিখে জাতিসংঘের ফাও একটি নির্দেশনা জারি করে, যাতে আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি কৃষি প্রধান দেশকে সতর্ক হবার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঐ নির্দেশনায় বলা হয় ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অর্থাৎ পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় বছর খানেক ধরে পঙ্গপালের ব্যাপক বংশবিস্তার হয়।
উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া, সৌদি আরব, ইরিত্রিয়া এবং ইয়েমেনসহ কয়েকটি দেশে পঙ্গপাল হামলা চালাতে পারে বলে সাবধান করা হয়।
দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান এবং ইরানকে সতর্ক করা হয়েছে, তবে ঐ তালিকায় ভারত না থাকলেও ইতিমধ্যেই দেশটির পাঞ্জাবে আক্রমণ চালিয়েছে পতঙ্গের দল।
কৃষক কীভাবে সাবধান থাকবেন
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক জাহান বলেছেন, পঙ্গপালের উপদ্রব ঠেকাতে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়নি।
তিনি বলেন, এরা বাতাসের সঙ্গে উড়ে আসে, আকাশ পথে উড়ে আসা কোন আক্রমণ থেকে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি রক্ষার কোন উপায় এখনো আমরা জানি না। তাছাড়া এরা কোন অঞ্চল লক্ষ্য করে যাত্রা শুরু করার পর সেটা থামিয়ে দেবার কোন পদ্ধতির কথাও আমরা জানি না।
তবে, পঙ্গপালের হাত থেকে বাঁচার জন্য বেশিরভাগ সময় উড়োজাহাজে, বা বহনযোগ্য যন্ত্রের সাহায্যে কীটনাশক ছিটিয়ে এদের দমন করা হয়।
যদিও জাহান বলছেন, সমস্যা হল এতে উপকারী কীটপতঙ্গও মারা পড়ে, যে কারণে এটি জটিল একটি সিদ্ধান্ত। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে
আরো পড়ুন:
> সিরিয়ায় প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু
> করোনা পরিস্থিতি তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে
> করোনা ঠেকাতে তালপাতার মাস্ক ব্যবহার
> করোনায় প্রাথমিকে ‘বার্তা’ দিবে মন্ত্রণালয়
> কোনো ধরনের জনসমাগম নয়: প্রধানমন্ত্রী
> করোনায় চিকিৎসক যুগলের অন্যন্য দৃষ্টান্ত
> করোনা একটি যুদ্ধ, আমাদের জিততে হবে
> করোনাভাইরাস: সাত উপায়ে থামবে ভুল তথ্য
> করোনার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা জানালেন দিবালা
> বিমানের দুটি ছাড়া সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ
> মাছ বিক্রেতা নারীই বিশ্বের প্রথম করোনা রোগী!
> পুলিশের লাঠিপেটা হয়রানি, বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ
> করোনা থেকে বাঁচতে ডেটল খেয়ে ৫৯ জনের মৃত্যু
> করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪ হাজার, আক্রান্ত ৭ লাখ
> করোনা বিষয়ে ড্যাবের স্বাস্থ্যসেবা ও হটলাইন চালু
> ঢাকার রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ, সাথে সেনাবাহিনী
> করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখছেন চিকিৎসকরা
> রাজধানীর যেসব হাসপাতালে মিলবে করোনার চিকিৎসা