ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

নেই কাজ, দরিদ্রদের ক্ষুধার জ্বালা প্রতিদিনই বাড়ছে

  খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ২১:০৩  
আপডেট :
 ০৩ এপ্রিল ২০২০, ২১:২৩

নেই কাজ, দরিদ্রদের ক্ষুধার জ্বালা প্রতিদিনই বাড়ছে
কাজ নেই, তাই মহানগরীর সোনাডাঙ্গা মেথরপট্টিতে শুক্রবার ত্রাণের অপেক্ষায় নিম্নবিত্ত মানুষ।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ হয়ে গেছে কল-কারখানা, নেই কাজ ফলে বিপদে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে খুলনা জেলার জনজীবনেও নেমে এসেছে স্থবিরতা।

একদিকে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক, বিপরীতে প্রতিদিনের খাবার যোগাড় করতে না পারা। নিম্নবিত্ত কৃষক-মজুরের ভোগান্তি এখন চরমে। এমন পরিস্থিতিতে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন।

সামর্থ্যবান মানুষ যে যার মতো হোম কোয়ারেন্টিন পালনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের সেই সুযোগ নেই। অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তারা।এরকম চিত্র দেশের প্রায় সর্বত্রই বিরাজ করছে।

শুক্রবার পর্যন্ত খুলনা জেলায় সবাইকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। অসহায় এসব মানুষের জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু তা অপর্যাপ্ত। এরইমধ্যে অনেক এলাকায় বেছে বেছে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বটিয়াঘাটার হালিয়া, বুনারাবাদ, কাশিয়াডাংগা, আমতলা, গৌরম্ভাসহ বিভিন্ন দিনমজুরেরা জানান, তারা একদিকে আতঙ্কিত। অন্যদিকে কাজ না করলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা দায়। সব মিলিয়ে ভালো নেই তারা।

দাকোপ উপজেলার আনন্দনগর গ্রামের দিনমজুর হজরত আলী জানান, একদিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয়, করোনাভাইরাসের ভয়ে বাড়িতে বসে আছেন। কয়েকদিন ধরে দিনে একবেলা করেও খাবার জোটে না।

দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান শেখ যুবরাজ জানান, মহামারির সময়ও মুখ দেখে, চিনে নিজের লোকদের বরাদ্দের মালামাল বিতরণ করা হচ্ছে।

সুতারখালি গ্রামের বাসিন্দা কালিদাস মন্ডল জানান, নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরে সংসার চালান তিনি। কয়েকদিন ধরে মাছ ধরা বন্ধ। কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে বলেন, এমন কোনো সাহায্যের কথা জানিই না।

কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা পঞ্চানন মন্ডল জানান, তার ইউনিয়নে সরকারের বরাদ্দ করা সাড়ে ৪ মেট্রিক টনের সঙ্গে ব্যক্তিগত অনুদান মিলিয়ে ৪৫০টি পরিবারকে সহায়তা করা হয়েছে। তবে জনসংখ্যার তুলনায় বরাদ্দ কম।

এই সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। কয়রা এলাকার একটি খাবার হোটেলের মালিক আনছার আলী বলেন, ক্রেতাদের আনাগোনা নেই। এভাবে চললে দোকান বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন, এখন পর্যন্ত কয়রায় করোনাভাইরাসে আক্রন্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তবে আমরা বিদেশফেরতদের প্রতি সর্তক রয়েছি। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতনতায় করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গরিব, দিনমজুর, কর্মহীন ব্যক্তিদের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করছি।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, সঙ্কটময় মুহূর্তে দরিদ্র পরিবারগুলোর প্রতি সরকার আন্তরিক। একটি পরিবারও যাতে না খেয়ে না থাকে সেজন্য সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত