ধর্ষণের পর ছাত্রীকে হত্যা, মাদ্রাসাছাত্র গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৫:৪৯
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে ধর্ষণ শেষে হত্যা মামলার তৃতীয় আসামি মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলামকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার বিকেলে র্যাবের একটি বিশেষ টিম কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। এ নিয়ে এই মামলার প্রধান আসামিসহ সকলেই ধরা পড়লো।
এর আগে একই ঘটনার মাদ্রাসাছাত্র মাহফুজুর রহমান ইছামুদ্দিনকে (১৮) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ইছামুদ্দিন ময়মনসিংহ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এরপর গত ২৯ মার্চ (রোববার) দুপুর আড়াইটায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আহসান হাবিব পৌর শহরের মহিলা কলেজ রোডস্থ আক্তারুজ্জামান কিন্ডার গার্টেনের সামনে থেকে প্রধান আসামি মোয়াজ্জিন আশিক ওরফে কফেলকে (১৯) গ্রেপ্তার করে।
প্রসঙ্গত, উপজেলার পুখুরিয়া দারুল আরাবিয়া কাছিমুল উলুম মাদ্রাসায় পড়ার সুবাদে স্থানীয় ধোপাঘাট গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মাহফুজুর রহমান ওরফে ইছামুদ্দিনের সাথে নান্দাইল উপজেলার উত্তর তারাপাশা গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে আরিফ ও আয়নাল হকের ছেলে আশিক ওরফে কফেল এর বন্ধুত্ব হয়। তিন বন্ধুর মধ্যে কফেল যশরা ইউনিয়নের পাড়া ভরট জামে মসজিদে মোয়াজ্জিনের চাকরি করে।
প্রায় এক বছর আগে পাশ্ববর্তী আঠারোদানা গ্রামের দরিদ্র আব্দুল মতিনের মেয়ে তাকমিনার সাথে কফেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে কফেল বহুবার মেয়েটির সাথে মিলিত হয়। গত ২৩ মার্চ (সোমবার) রাত সোয়া ২টার দিকে বন্ধু ইছামুদ্দি ও আরিফ যোগসাজসে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ডেকে পারাভরট জামে মসজিদের পাশে নিয়ে যায়। পরে ইছামুদ্দিন ও আরিফ পাহারা দেয় এবং কফেল মেয়েটিকে ধর্ষণ করে।
এ সময় মেয়েটি কফেলকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় এবং বলে ‘আমাকে বিয়ে না করলে বড় হুজুরকে বলে দেব’। এতে কফেল ক্ষিপ্ত হয়ে পাহারারত দুই বন্ধুকে ডেকে এনে তিন জন মিলে মেয়েটিকে মাটিতে ফেলে বুকে চেপে বসে ও মুখ চাপা দিয়ে হত্যার পর জাম গাছে ঝুলিয়ে রাখে।
ঘটনার পর ফজরের সময় কফেল ওযু-গোসল ছাড়াই আযান দেয়। ভোরের দিকে লাশ ঝুলে থাকার খবর ছড়িয়ে গেলে লোকজন আসতে থাকে। এ সুযোগে কফেল পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এ ঘটনায় পরে নিহতের বাবা ২৪ মার্চ (মঙ্গলবার) গফরগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গফরগাঁও সার্কেল) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ঘটনার এগারো দিনের মাথায় প্রধান আসামি কফেলসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে ভিকটিমের পরিবার সুবিচার পাবেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে