ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনায় বৃদ্ধের মৃত্যু, রাজধানীতে তিন ভবন লকডাউন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২০, ২০:৩৯

করোনায় বৃদ্ধের মৃত্যু, রাজধানীতে তিন ভবন লকডাউন
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর একটি বাড়িতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধের (৬৮) মৃত্যুর পর মিরপুরের ১১ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ওই বাড়িসহ তিনটি ছয়তলা ভবন লকডাউন করে পাহারা বসিয়েছে পুলিশ।

শনিবার ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন পল্লবী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ওই সব ভবনে জরুরি প্রয়োজনে একজনের বেশি কাউকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে আনতে পারবেন।

শাহ আলী থানার ওসি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কমার্স কলেজের শিক্ষক মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে তার বাবার বাসায় কোয়ারেন্টিনে আছেন। সামাজিক সংক্রমণ প্রতিরোধে কোয়ার্টারে থাকা তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে রেখে পুলিশ নজরদারি করছে।

জানা যায়, যে ব্যক্তি মারা গেছেন তার ছেলে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মিরপুরে ঢাকা কর্মাস কলেজের পেছনে শিক্ষকদের কোয়ার্টারে থাকেন। সেই ফ্ল্যাটে থাকা তার পরিবারকে (সঙ্গনিরোধ) কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।

পল্লবী থানার পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তি অগ্রণী ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। গত ২৬ মার্চ ওই ব্যক্তির প্রচণ্ড হাঁচি শুরু হয়। তখন তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ওষুধপত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বাসায় আসার পর তার হাঁচি বাড়তে থাকে। এরপর তার শরীরে জ্বর দেখা দেয়। ২ এপ্রিল অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ওই হাসপাতালে গত শুক্রবার দুপুরে তিনি মারা যান। তাকে খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, বৃদ্ধের ছেলে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে মিরপুর কমার্স কলেজের পেছনে শিক্ষকদের কোয়ার্টারে থাকতেন। বৃদ্ধের ছেলে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষক। বাবাকে দেখতে তিনি তার স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে কোয়ার্টারে এসে থাকতেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ জনে।

শনিবার দুপুরে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব তথ্য জানান।

ফ্লোরা বলেন, দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৫৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয় ৪৩৪টি। এছাড়া নতুন করে আরও ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে আইইডিসিআরের পরীক্ষায় এবং বাকি একজন ঢাকার বাইরের ল্যাবে। এছাড়া নতুন করে ৪ জনসহ মোট ৩০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন আগে থেকে আক্রান্ত ছিলেন, আরেকজন নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন। একজনের বয়স ৯০ বছর এবং আরেকজনের ৬৮ বছর। একজন ঢাকার, আরেকজন ঢাকার বাইরের। একজন হৃদরোগী ছিলেন, আরেকজনের স্ট্রোক করার ইতিহাস ছিল।

আইইডিসিআর পরিচালক জানান, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছেন। যাদের বয়স ১০ বছরের নিচে। তিন জনের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। দুজনের বয়স ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। একজনের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ও অন্যজনের বয়স ৯০ বছর।

তিনি জানান, বর্তমানে মোট চিকিৎসাধীন রোগী ৩২ জন। এর মধ্যে ১২ জন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ২০ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত