ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

খাটিয়া দিলো না কেউ, মাটিতে রেখেই জানাজা

  ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২০, ১৮:০৮

খাটিয়া দিলো না কেউ, মাটিতে রেখেই জানাজা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে ইসরাইল হোসেন (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। গত ৪/৫ দিন ধরে তিনি জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শনিবার রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। উপজেলার জামাল ইউনিয়নের খানজাপুর গ্রামে তার বাড়ি।

মৃত ইসরাইল হোসেনের জামাই বোরহান উদ্দিন জানান, তার শ্বশুর গত ৪/৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। এছাড়া তার সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল। গত শুক্রবার বিকেলে ইসরাইল হোসেন জামাইয়ের বাড়িতে আসে। শনিবার রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এ সময় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

করোনা আক্রান্তের প্রায় সকল উপসর্গই ছিল ইসরাইল হোসেনের। মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহ করেন এবং রোববার সকালে পরিবারের স্বজনদের কাছে মরাদেহ হস্তান্তর করে।

জানা যায়, মৃতদেহের দাফন ও কাফনের ব্যবস্থা করেন কালীগঞ্জ উপজেলার ৬ আলেম। হাসপাতাল থেকেই মরদেহের গোসল করানো হয়। এরপর তাদের মাধ্যমে একটি সিএনজিতে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।

এ সময় জানাজা পড়ানোর জন্য আলেমদের পক্ষ থেকে গ্রামের মসজিদের খাটিযা চাওয়া হয। কিন্তু গ্রামবাসীরা খাটিয়া দিতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মাটিতে রেখেই জানাজা সম্পন্ন করেন তারা।

জানাজায় অংশ নেয়া ঈমাম ফারুক নোমানী জানান, জানাজার নামাজ পড়ানোর জন্য গ্রামবাসীর কাছে মসজিদের খাঁটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা সেটা দিতে অস্বীকার করে। পরে মরদেহ মাটিতে রেখেই জানাজা সম্পন্ন করে লাশ দাফন করা হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শামীমা শিরিন লুবনা মৃত ব্যক্তির সাথে থাকা স্বজনদের বরাত দিয়ে বলেন, চারদিন ধরে জ্বর ছিল। ঠাণ্ডা-কাশি এবং গলাব্যথাও ছিল। আমাদের সাথে আগে থেকে সে কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। গত দুইদিন ধরে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। শনিবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে আনার পথে সে রাস্তার মধ্যে মারা গেছে।

তিনি আরো জানান, হাসপাতাল থেকেই মারা যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তার করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করি। নমুনা ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি। রিপোর্ট হাতে পেলে করোনা আক্রান্ত কি-না জানা যাবে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, মারা যাওয়ার পর তার লাশ নেওয়ার জন্য কোন গাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তেমন কোন লোকজন ছিল না। লাশ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া, জানাজা, দাফনসহ সবকিছুই কয়েকজন তরুণ আলেম ও পুলিশ করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি বলেন, পুুলিশের সাথে একজন ডাক্তার, একজন মসজিদের ইমাম ও মৃত ব্যক্তির এক ছেলে ছিল। সকালে গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকালে বাড়ি দুটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা জানান, মৃত ইসরাইল হোসেনের গ্রামের বাড়ি জামাল ইউনিয়নের খানজাপুর গ্রামের বাড়ি ও শহরের আড়পাড়া নদীপাড়া এলাকায় জামাই বোরহান উদ্দিনের বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত