ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

পোল্ট্রি শিল্পে ধস, কর্মহীন হওয়ায় আশঙ্কায় লক্ষাধিক শ্রমিক

  জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৩০  
আপডেট :
 ১৬ এপ্রিল ২০২০, ১৯:৪১

পোল্ট্রি শিল্পে ধস, কর্মহীন হওয়ায় আশঙ্কায় লক্ষাধিক শ্রমিক

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রভাবে হঠাৎ করে দেশের বৃহত্তম জয়পুরহাটের পোল্ট্রি শিল্পতে ধ্বস নেমেছে। মুরগি-ডিমের দাম কম, হাট-বাজারে মানুষের জনসমাগম, বেচাকেনা কম ও দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় বন্ধের পথে এ জেলার ছোট বড় খামার, ফিড মিল ও হ্যাচারীগুলো। এতে এ শিল্পে যুক্ত প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মচারী বেকার হওয়ার আশংকায় পড়েছে। ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে অনেক খামার, ফিড মিল ও হ্যাচারী। আর অনেকেই কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

দেশের বৃহত্তম মুরগী উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট। এখানকার উৎপাদিত মুরগি, ডিম ও ফিড জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় অধিকাংশ জেলায়। জেলার প্রায় ১০ হাজার মুরগির খামারে জড়িত আছে লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মচারী। এছাড়াও ফিড ও হ্যাচারীতে যুক্ত আছেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। দেশে মোট মুরগির চাহিদার ৫০% সোনালী মুরগি দিয়ে পূরণ করা হয় হয়। এর মধ্যে জয়পুরহাটে উৎপাদন হয় ৭০%। এ জেলার খামারগুলিতে বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৬৮ হাজার টন মুরগির মাংস ও ৪০ কোটি ডিম উৎপাদন হয়।

সরেজমিনে জানা গেছে, হঠাৎ করে করোনাভাইরাসের প্রভাবে এ জেলার মুরগি অন্যান্য জেলায় সরবরাহ একেবারেই কমে গেছে। এছাড়াও বাজারে মুরগির ডিমের দাম কমে যাওয়ায় লোকশানের মুখে পোল্ট্রি শিল্পের ব্যবসায়ীরা। এতে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। আর ব্যবসায়ীরা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সহায়তার দাবি করেছেন পোল্ট্রি মালিকরা।

এদিকে করোনাভাইরাসের থাবায় এ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের দৃষ্টি গোচরের জন্য সংবাদ সম্মেলনও করেছে জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি।

জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আনোয়ারুল হক আনু জানান, দেশের বৃহত্তম জয়পুরহাটের এই পোল্ট্রি শিল্পতে লক্ষাধিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে। করোনার প্রভাবে ইতিমধ্যেই ঋণের বোঝা নিয়ে অনেক খামার, ফিড মিল ও হ্যাচারী বন্ধ হয়ে গেছে। তাই সরকার থেকে প্রান্তিক খামারীদের প্রনোদনা ও ব্যবসায়ীদের ২% হারে সুদে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার দাবিসহ বর্তমান ব্যাংকের সুদ মওকুফের দাবি জানান তিনি।

সদর উপজেলার হিচমী বাজারের বি.এন পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারীর স্বত্তাধিকারী নুরশাদ হোসেন জানান, একটি মুরগির বাচ্চার প্রোডাকশন খরচ পড়ছে ১১-১২ টাকা, আর আমরা বাচ্চা বিক্রি করছি ২-৩ টাকায়। এদিকে ডিমের প্রোডাকশন খরচ ৮ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টাকা পর্যন্ত। আমি একেবাইে শেষ হয়ে গেছি। তাই সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আমরা আর দাঁড়াতে পারবো না।

কালাই উপজেলার পুনট বাজারের শাকিলা পোল্ট্রির স্বত্তাধিকারী খলিলুর রহমান বলেন, বর্তমান আমার খামারে যে মুরগি আছে তা আর বিক্রি হচ্ছে না। আমার মোট ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঋণ আছে। এর মধ্যে ফিড মিল মালিকরা আমার কাছ থেকে পাবে ৫ কোটি টাকা। তারা আমাকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি এখন কোথায় থেকে তাদের টাকা দিব।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজার রহমান জানান, করোনার কারণে জয়পুরহাটে পোল্ট্রি শিল্পতে ধ্বস নেমে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে সরকারের প্রণোদনা পায় সে ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রীকে ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত