ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

সৌদি থেকেই ফিরতে হবে ১০ লাখ বাংলাদেশিকে!

সৌদি থেকেই ফিরতে হবে ১০ লাখ বাংলাদেশিকে!

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের জন্য হুমকিই এসেছে, ‘নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে নাও, না হলে বিভিন্নভাবে তাদের সমস্যায় ফেলা হবে’। এ পরিস্থিতিতে কেবল সৌদি আরব থেকেই বিতাড়িত হবেন প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি। শুধু সৌদি আরব নয়, কাতার, ইরাক, বাহরাইনসহ উপসাগরীয় দেশগুলো অবৈধ শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকারকে। এরই মধ্যে কয়েকটি দেশ থেকে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস গত মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এমন তথ্য জানিয়েছে।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতও বাংলাদেশী অবৈধ শ্রমিকের পাশাপাশি আসামি ফেরত পাঠাতে চাইছে। দেশটির সঙ্গে যেহেতু সাজাপ্রাপ্ত আসামি হস্তান্তর বা ট্রান্সফারিং অব সেনটেন্স পারসনবিষয়ক চুক্তি রয়েছে, সেহেতু তাদের বলা হয়েছে আগে বাংলাদেশিদের তালিকা পাঠাতে। নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে আনবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে। শুরুতে অবৈধ ও আনডকুমেন্টেড বাংলাদেশীদের নিয়ে আসতে বলছে। তারপর হয়তো বৈধভাবে যেসব বাংলাদেশী রয়েছেন, তাদের বিভিন্ন উপায়ে সৌদিতে টেকা কঠিন করে দেবে দেশটি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষকে হয়তো এখনই ধরে বিতাড়িত করবে না সৌদি সরকার। তবে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বিশালসংখ্যক বাংলাদেশিকে নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত করবে দেশটি।

বাংলাদেশিদের একত্রে না পাঠিয়ে ধাপে ধাপে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সেটা শুনেছি এবং তারা যথেষ্ট তাগাদা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের বলেছি, আমরা একসঙ্গে এত লোক আনতে পারব না। আমরা আমাদের নাগরিক অবশ্যই নিয়ে আসব। তবে ধাপে ধাপে আনতে চাই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ দেশ দুটি কাজ করেছে। এর মধ্যে একটি হলো যারা আনডকুমেন্টেড ও অবৈধ তাদের নিবন্ধন করার জন্য বলছে। নিবন্ধন করলে আর কোনো জরিমানা দিতে হবে না। আর দেশে যেতেও তাদের কোনো খরচ লাগবে না। এতে করে বাংলাদেশিরা দল বেঁধে নিবন্ধন করছেন। আর নিবন্ধনের পর তাদের ক্যাম্পে রেখে দিচ্ছে। এখন তাদের বাধ্য হয়ে চলে আসতে হবে। আর জেলে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে মাফ করে দিয়েছে। এদের জেল থেকে সোজা প্লেনে উঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে তাদের জানিয়েছি যে জেলে যারা রয়েছেন তাদের তথ্য আমাদের আগে দেয়ার জন্য। এরা আমাদের দেশের নাগরিক কিনা, তা আমাদের যাচাই-বাছাই করতে হবে।

২০১৫ সাল থেকে সৌদি আরবের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনের কারণে সেখানে থাকা বৈধ ও অবৈধ অন্য দেশের নাগরিকদের বিতাড়নের নীতি নিয়েছে দেশটির সরকার। এখন আর সাধারণ ক্ষমা করে পুনরায় বৈধ হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না সৌদি আরব সরকার। এ প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস আশঙ্কা করছে, এবার ৫ থেকে ১০ লাখ বাংলাদেশীকে বিতাড়িত করবে সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের ২০৩০ ভিশন অনুযায়ী, পুরো সৌদির শ্রমবাজারে ৭০ শতাংশ সৌদি আরবের নাগরিককে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। এটি বাস্তবায়নে সব দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের ক্রমান্বয়ে ছাঁটাই করে নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে সৌদি সরকার। এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বাধামূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে সৌদি সরকার।

এনএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত