ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিশু হত্যা করে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হওয়ার চেষ্টা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২০, ০৩:৪৬

শিশু হত্যা করে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হওয়ার চেষ্টা
শিশু আলিফ

গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে র‍্যাবের ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ শিশু আলিফ (৫) হত্যার প্রধান আসামি জুয়েল আহমেদ সবুজ (২১) নিহত হয়েছে। এসময় দুই র‍্যাব সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার রাতে র‌্যাব-১ এর স্পেশালাইজ কোম্পানি পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাংলাদেশ জার্নালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শিশু মো. আলিফ হোসেন (৫) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীর পারিজাত আমতলা এলাকার ফরহাদ হোসেনের ছেলে।

র‌্যাব জানায়, কোনাবাড়ীর পারিজাত এলাকার ফরহাদ হোসেনের শিশু সন্তান আলিফ হোসেন গত ২৯ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে নিজেদের বাসা থেকে নিখোঁজ হয়। স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিখোঁজের পরের দিন ভিকটিমের বাবার মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা শিশু আলিফকে অপহরণের কথা জানিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তারা মুক্তিপণের অর্থ না পেলে শিশুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর শিশুর পরিবার র‌্যাব ১-এর সাহায্য চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীরা গাজীপুরের পুবাইল রেললাইন অবস্থান করে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা সেখানে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা সাগরকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে কোনাবাড়ী এলাকায় তাদের ভাড়া করা তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি ঝুটের গুদামে লুকিয়ে রাখা প্লাস্টিকের বস্তায় শিশু আলিফের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের বাড়ির তিন তলার ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানা চাকরি করতেন সাগর।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আটক সাগর জানান, তারা তিন বন্ধু মিলে প্রায় ছয় মাস ধরে ভিকটিমদের বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্লাটের ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করে আসছেন। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করায় এবং ভবনের ছাদে উঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার কারণে সপ্তাহ খানেক আগে রুমমেট জুয়েল আহমেদ ও সবুজকে কয়েকটি চড়-থাপ্পর দেন আলিফের বাবা। এতে ক্ষুব্ধ হয় সাগর ও তার বন্ধুরা। থাপ্পরের প্রতিশোধ নিতে জুয়েল বুধবার বিকেলে কৌশলে খেলার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে আলিফকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে সাগর ও জুয়েল। পরে তারা শিশুর লাশ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে একই ভবনে তাদের ভাড়া বাসার পাশের ঝুটের গুদামের ভেতর লুকিয়ে রাখে। তারা বাসায় রাত্রীযাপন করে পরের দিন সকালে বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে তারা বিভিন্নজনের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ভিকটিমের বাবাকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ বাবদ দিতে বলে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাগর আরো জানিয়েছে, এ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জুয়েল আহমেদ ওরফে সবুজ। তিনি একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি নিজেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত