ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

পদ্মা সেতু নির্মাণ এলাকায় ঢোকা নিষেধ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ মে ২০২০, ১৩:৪৮  
আপডেট :
 ০৭ মে ২০২০, ১৩:৫৩

পদ্মা সেতু নির্মাণ এলাকায় ঢোকা নিষেধ
ফাইল ছবি

পদ্মা সেতুর কাজে কর্মরত পাঁচ হাজার জনবলকে করোনা মহামারি থেকে রক্ষা করতে নেয়া হয়েছে কঠোর বিধি-নিষেধ। পদ্মা সেতুর পিয়ার তৈরি করা ছাড়া পুরো সেতুটি তৈরি হচ্ছে চীনের উহান শহরে কারখানায়। তবে বাংলাদেশে এসব প্রস্তুত করে পদ্মা সেতু তৈরিতে যুক্ত রয়েছেন তিন হাজার শ্রমিক। এর সঙ্গে ১ হাজার ৫০০ শ্রমিক রয়েছেন নদীশাসনের কাজে। এই সাড়ে চার হাজার শ্রমিকের সবাই মূল সেতুর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও নদীশাসনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশনের অধীনে কাজ করেন।

প্রকল্পের বিদেশি পরামর্শক রয়েছেন ১৫০ জন। আরো রয়েছেন সেতু কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত প্রকৌশলীসহ ২২ জন, নিরাপত্তার দায়িত্বের ১৪০ জন আনসার সদস্য। প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের বড় একটি অংশ চীনের নাগরিকসহ ২২টি দেশের নাগরিকও পদ্মা সেতুর প্রকল্পে কাজ করছেন। সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৮১২ জন পদ্মা সেতুর প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত।

কোয়ারেন্টিনের মধ্যেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের জনবলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পর্বের ইতি টানা হয়নি। পুরো প্রকল্প এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাওয়া ও জাজিরায় দুই পাশের ১৩২ একর এবং দুই পাশের ৪০০ একর কনস্ট্রাকশন এলাকা। বহিরাগতদের এ এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।

সাড়ে চার হাজার শ্রমিককে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ভেতরে আনা হয়েছে। তাদের সবার খাবার সরবরাহ করছেন ঠিকাদারেরা। আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। প্রকল্পের দুই পাশেই হাসপাতাল রয়েছে। এর শয্যাসংখ্যা ১২। চিকিৎসাসেবায় চারজন চিকিৎসক ও চারজন নার্স রয়েছেন। তাদের সঙ্গে একজন সেফটি অ্যান্ড হেলথ স্পেশালিস্ট রয়েছেন।

জরুরি প্রয়োজনে বাইরে থেকে বা ঢাকা থেকে সংশ্লিষ্ট কেউ এলে তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এর আগে তিনি কাজে যোগ দিতে পারবেন না।

খাবার সরবরাহের জন্য নির্দিষ্ট গাড়ি আছে। সেসব গাড়িতে আনা খাদ্যপণ্য প্রকল্পের গেটে রাখা হয়। জীবাণুমুক্ত করে এগুলো ভেতরে রাখা হয়। খাবার রান্না হয় প্রকল্প এলাকার ভেতরে। সেই রান্না পরে পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া বিদেশিদের জন্য আগে থেকে ক্যান্টিন রয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির তথ্য জানতে প্রকল্প এলাকার পাশে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং ও শ্রীনগর এবং শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হয়। এসব এলাকায় কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই তথ্য পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। সেই অনুযায়ী প্রকল্পের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম আইইডিসিআরের পরামর্শ ও নির্দেশনায় চালানো হচ্ছে। প্রকল্প এলাকার ভেতরে থাকা সবারই প্রতিদিন সকাল-বিকেল শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। কারো মধ্যে কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করানো হয়। শ্রমিকদের মধ্যে কেউ বাইরে যেতে চাইলে তাকে একেবারে ছুটি দেয়া হয়। নিয়ম মেনে চলায় এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার জনবলের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি।

পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাইরের লোক ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শ্রমিকেরা কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে থাকছেন, খাবারও দেয়া হচ্ছে। তারা যেন বাইরে না যান বা যেতে না হয়, সে জন্য ভেতরেই ক্যানটিন করে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে।’

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত