ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

পৌরভবনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, মেয়র-কাউন্সিলর আহত

  জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১০ মে ২০২০, ১৮:২২  
আপডেট :
 ১০ মে ২০২০, ১৯:২০

পৌরভবনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, মেয়র-কাউন্সিলর আহত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পৌরভবনে মেয়র ও কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে মেয়র, কাউন্সিলর ও সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছে।

রোববার সকাল ১১টায় পৌরভবনে মেয়রের প্রবেশে বাধা নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।

উভয় পক্ষের আহতরা হলেন, মেয়র রুকনুজ্জামান রোকন, মেয়রের দেহরক্ষী তনয়, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী, কাউন্সিলর কালা চাঁন পাল, জহুরুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকলাদার, যুবলীগকর্মী সাদ্দাম, নান্নু, কফিল, বাবু ও লিটন।

গুরুতর আহতবস্থায় মেয়রের দেহরক্ষী তনয়কে (৩২) জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ও 'দৈনিক আলোচিত জামালপুর'র সাংবাদিক মাসুদুর রহমানকে (৩০) সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মেয়র রুকনুজ্জামান রোকন তার সমর্থিত লোকজন নিয়ে প্রবেশ করতে গেলে কাউন্সিলররা ও যুবলীগকর্মী বাধা দেয়। এই নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়।

পরে খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কাউন্সিলররা তৎক্ষাণিক সংবাদ সন্মেলন করে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মেয়রের বিচারের দাবি করেছে।

জানা যায়, পৌরসভার ঠিকাদারীসহ নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে পৌর মেয়র রুকনুজ্জামানের সাথে কাউন্সিলরদের বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে গত পহেলা মে মিটিং করে কাউন্সিলররা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে।

ওইদিন রাতে সংবাদ সন্মেলনে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে পৌর মেয়র রুকনুজ্জামান দাবি করেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাসানের ইন্ধনে কাউন্সিলররা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে তা মনগড়া, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

মেয়রের এই অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তৎক্ষাণিক সভা আহ্বান করে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে মেয়র রুকনুজ্জামানকে অব্যহতি দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন বাদশার সাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়। এ নিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে প্রকাশ্য রুপ নেয়। রোববার সকালে মেয়র তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পৌরভবনে প্রবেশ করতে গেলে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

আহত প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী দাবি করে বলেন, পৌরভবনে প্রবেশের সময় কাউন্সিলররা বকেয়া বেতন-ভাতা দাবি করলে মেয়র ক্ষিপ্ত হয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য শুরু করেন। কাউন্সিলররা মেয়রের এহেন আচরনের প্রতিবাদ করলে মেয়রের ক্যাডাররা কাউন্সিলরদের ওপর হামলা চালায়।

পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকলাদার বলেন, ঠিকাদারী কাজে পৌরসভায় গিয়েছিলাম। এসময় মেয়রের লোকজন তার ওপর হামলা করেছে। সে ছাড়াও তার ৬ কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন জানান তিনি।

ঘটনার পরপরই পৌর মেয়র রুকনুজ্জামান রুকন ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করে বলেন, আমি পৌরসভায় প্রবেশ করার সময় কাউন্সিলররা ও যুবলীগের কর্মীরা আমাকে ও আমার দেহরক্ষীকে মারধর করেছে। এই হামলার ঘটনায় তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, পৌরভবনে সংঘর্ষে খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত