ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

মার্কেট খোলার সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতি’ বললেন সিভিল সার্জন

  ​কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২০, ১৮:০৬

মার্কেট খোলার সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতি’ বললেন সিভিল সার্জন

কুষ্টিয়ায় আবারও ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে মার্কেট ও শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এতে আবারও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্কায় জেলার স্বাস্থ্য বিভাগসহ ওয়াকিবহাল মহল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের উপস্থিতিতে এবং জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সমন্বিত জেলা কমিটির এক জরুরি সভার সিদ্ধান্তে মার্কেট খোলার এই অনুমতি দেয়া হয়।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ওবাইদুর রহমান জানান, এর আগে লকডাউনে বন্ধ হয়ে যাওয়া দোকান-পাটের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের দূরাবস্থা নিরসনের দাবির মুখে গত ১০ মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কঠোর শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট ও শপিংমল সকাল ১০টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় মার্কেট ও শপিংমলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মাঝেই চরমভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানার প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জেলার স্বাস্থ্যবিভাগের সুপারিশ ও বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে এক সপ্তাহ পর গত ১৬ মে সকল প্রকার মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ ঘোষণা করেছিলেন জেলা প্রশাসক।

কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এসএম কাদরী শাকিল বলেন, লকডাউনে ঈদের আগের মার্কেট বন্ধে একদিকে ব্যবসায়ীদের দূরবস্থায় নিষেধাজ্ঞা না মেনে কিছু কিছু দোকানের সার্টার খুলে ভিতরে ক্রেতাদের ঢুকিয়ে কেনা-বেচার কারণে চরমভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘন হচ্ছিলো। এমন অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা এবং পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটার অভিযোগে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা শনিবার সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানা চত্বরে ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

এ সময় ব্যবসায়ীদের সাথে নেতৃবৃন্দ সংহতি জানিয়ে অন্তত ঈদের পূর্বে এই দুইদিন দোকান-পাট, মার্কেট ও শপিংমল খোলা রাখার দাবি জানান।

তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, লকডাউন হতে হবে সবার জন্য। জেলার বাইরে থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা হতে আগতদের নির্বিঘ্নে ঢুকতে দিয়ে যদি করোনা সংক্রমণ না ছড়ায় তাহলে কেবলমাত্র ব্যবসায়ীরাই সংক্রমণ ঝুঁকির দায় নিবে কেন?

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন দোকানপাট খুলে দেয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন, 'আজ ২৩ মে ২০২০ শনিবার কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় ক্রেতাদের চাহিদা, বিভিন্ন দোকানির ক্রয় করা মালামাল বিক্রয় না হওয়ায় ব্যাপক লসের মুখোমুখী হওয়ায় আগামী ঈদ-উল-ফিতর পর্যন্ত দোকান-পাট, বিক্রয় কেন্দ্র, শপিংমলসমূহ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব প্রতিপালন করে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সাবধানে থাকুন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন, অতি প্রয়োজনীয় না হলে ঘর থেকে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন।'

এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের মুখপাত্র কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইসএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে এভাবে মার্কেট ও শপিংমল খুলে দেয়া মানে হলো- আমরা নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার দড়জা খুলে দিলাম। অনেকটা বলা যায় এই সিদ্ধান্তটা জেলাবাসীর স্বাস্থ্যের জন্য একটা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। তবে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সকলের প্রতি আহ্বান থাকবে- নিজে বাঁচুন দেশকে বাঁচান। নিজ দায়িত্বে স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিরাপদ থাকুন। বাকিটা আল্লার ইচ্ছা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত