ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা সৈকত যেন শূন্য মরুভূমি

  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২০, ১৮:১৪

পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা সৈকত যেন শূন্য মরুভূমি

বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। তারপর দেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে সুপার সাইক্লোন আম্পান। এর প্রভাব পরেছে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায়। দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতজুড়ে এখন বিরাজ করছে শুনশান নিরবতা। পর্যটন স্পটগুলো আম্পানের তাণ্ডবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পরে রয়েছে। হোটেল-মোটেল খাবার রেষ্টুরেন্টসহ কোথাও নেই পর্যটকের কোলাহল। এ বছর ঈদে একেবারেই পর্যটকশূন্য। এ যেনো শূন্য এক মরুভূমি।

পর্যটক না থাকায় আবাসিক হোটেলগুলো রয়েছে তালাবদ্ধ। পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঘরে বসে দিন গুনছে, কবে এমন পরিস্থিতি শেষ হবে। চিরচেনা কুয়াকাটার সৈকত এখন যেন স্থানীয়দের কাছেই অচেনা লাগছে। জনমানবহীন সৈকতের পুর্ব-পশ্চিমে বালিয়ারী ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছে না।

প্রতিবছর ঈদের এমন সময় আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোতে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকতো। রাত্রিযাপনের জন্য অগ্রিম বুকিং দিয়েও পর্যটকদের রুম সংকটে ভুগতে দেখা গেছে। সেখানে এ বছর আবাসিক হোটেলগুলো রয়েছে তালাবদ্ধ। খাবার হোটেল, ঝিনুকের দোকান, কাকড়া ফ্রাইয়ের দোকানসহ পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে পর্যটকদের ভ্রমণ অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।

পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২০ বছরের মধ্যে রমজানের ঈদের সময় পর্যটকশুন্য কুয়াকাটা তারা আর দেখেনি। প্রতিবছর ঈদের সময় কুয়াকাটা সৈকতে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জায় ঝলমল করতো। কিন্তু সেখানে এখন সন্ধা নামলেই ভূতুরে অবস্থা। হোটেল-মোটেলগুলো নানা রঙে সাজানো থাকতো। সেখানে এখন উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পরে মানুষশুন্য কুয়াকাটা সৈকতে নামলে গা ছম ছম করে। নেই আলোকসজ্জা, মরণব্যাধী ঘাতক করোনা প্রতিরোধে সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কতার কারণে কুয়াকাটার এমন দৃশ্য বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ইসাহাক বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে হোটেল মোটেল, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ কুয়াকাটায় অবস্থানরত ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরিষ্ট গাইডরা। বেকার হয়ে পরেছে পর্যটনমুখী স্বল্প আয়ের মানুষগুলো। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে পর্যটন স্পটগুলো। এখন চিরচেনা কুয়াকাটা যেন অচেনা হয়ে গেছে।

সমুদ্রবাড়ি রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, উপজেল প্রশাসনের নির্দেশনার পর আমাদের হোটেল বন্ধ রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত হোটেলের কর্মচারীদের ছুটি দেয়া হয়েছে।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা'র (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, ঈদে পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা এই প্রথম দেখেছেন তিনি। পর্যটক ছাড়াও স্থানীয় নারী ও শিশুসহ হাজার মানুষ ঈদের দু’য়েক দিন আগে থেকে ভিড় জমাতো সৈকতে। কিন্তু সেখানে ভিন্ন চিত্র বিরাজ করছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশের সিনিয়র এএসপি জহিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে কুয়াকাটায় কোন পর্যটক নেই। এখানকার হোটেল-মোটেলগুলোকে বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হোটেলে মোটেলে বুকিং না রাখার জন্য মালিকদের বলে দিয়েছেন বলে তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত