ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

লিবিবায় হত্যাকাণ্ড: ৩ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২০, ১৮:৩৭  
আপডেট :
 ০১ জুন ২০২০, ১৮:৪০

লিবিবায় হত্যাকাণ্ড: ৩ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা

লিবিবায় গুলি করে দুই যুবককে হত্যা ও অপর যুবককে আহত করার ঘটনায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানায় তিন মানব পাচারকারী বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে নিহত সুজন মৃধার বাবা কাবুল মৃধা বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মৃধা আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, মানব পাচারকারী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের ওসমান শেখের ছেলে লিয়াকত শেখ ওরফে লেকু শেখ (৪৫), একই উপজেলার যাত্রাবাড়ী গ্রামের মৃত রজব আলী মোড়লের ছেলে রব মোড়ল (৪৫) ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সত্যবর্তী গ্রামের আ. মজিদ সরদারের ছেলে জুলহাস সরদার।

মামলার বিবরণে নিহত সুজন মৃধার বাবা কাবুল মৃধা জানান, গত ১ জানুয়ারি তার ছেলে সুজন মৃধা ও ভাগ্নে ফরিদপুর জেলার সালথা থানার আলমপুর গ্রামের কবির শেখের ছেলে কামরুল শেখকে ৮ লাখ টাকা ও কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া পাঠানোর পর ভালো বেতনে চাকরি দের জন্য মৌখিক চুক্তি হয়। এরপর ১৫ জানুয়ারি তিনি ২ লাখ ৫০ হাজার ও কালাম শেখ ৫০ হাজার টাকা দালাল রব মোড়লকে দেন। পরে রব মোড়ল অন্য দুই আসামির কাছে টাকা পৌঁছে দেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামিরা বাড়িতে এসে লিবিয়া পাঠানোরে উদ্দেশ্যে সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখকে বাড়ি থেকে ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর ভারত থেকে দুবাই, কুয়েত ও মিশর হয়ে লিবিয়া পাঠায়।

পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি আসামিদেরকে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়। লিবিয়া যাওয়ার এক মাস পর চুক্তি ভেঙে অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় মুক্তিপণের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। পরে দালাল চক্রটি সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতন করার ভয়েস মেসেজ পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠায়।

পরে মেসেজ পেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়টি তিন দালালকে জানালে তারা দাবিকৃত টাকা না দিলে কিছেই করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরপর ২৮ মে সুজন মৃধা ও কামরুল শেখকে গুলি করে হত্যা করা হয় ও ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন।

আহত ওমর শেখের বাবা কালাম শেখ ও মা শাহিদা বেগম তার আহত ছেলেকে ফেরত চেয়েছেন। একইসাথে তারা মানব পাচারকারী দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মৃধা আবুল কালাম আজাদ জানান, দুই যুবককে গুলি করে হত্যা ও অপর এক যুবককে গুলি করে আহত করার ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু আসামিরা পলাতক রয়েছে। আসামিদের ধরতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি লিবিয়ায় গুলি করে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে গোপালগঞ্জের মুকসদুপুর উপজেলার সুজন মৃধা রয়েছেন। অপর যুবক ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে লিবিয়ার ত্রিপলির একটি হাসপাতালে জীবন-মরনের সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত