ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাস্ক পড়লে জীবানু প্রতিরোধ সম্ভব: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  মো. খায়রুল ইসলাম

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২০, ১৫:৩৪

মাস্ক পড়লে জীবানু প্রতিরোধ সম্ভব: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেছেন, শুধুমাত্র একটি সাধারণ কাপড়ের মাস্ক পড়লেই জীবানুযুক্ত হাঁচি-কাশি, এবং তরল কণা ছড়ানো প্রতিরোধ করা সম্ভব। মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান তিনি।

ডা. নাসিমা বলেন, ‘তবে যাদের শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা আছে, যিনি অজ্ঞান, অক্ষম বা মাস্ক খোলার জন্য যাদের অন্যের সাহায্য লাগে তারা এই কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করতে পারবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিডিসি ইউএসের প্রস্তাবনা অনুযায়ী সার্জিক্যাল মাস্ক এবং এন-৯৫ মাস্ক শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মী যারা রোগীর সংস্পর্শে আসে তাদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। সাধারণ সব মানুষের জন্য সব সময় ঘরের তৈরি কাপড়ের মাস্ক পড়তে হবে এবং এই কাপড়ের মাস্ক পড়ার সুবিধা হলো এই মাস্ক মুখে ঠিকমত আটকানোর পাশাপাশি মুখে আরামবোধ হয়। নাকমুখ পুরোপুরি ঢেকে থাকে।’

ডা. নাসিমা আরো উল্লেখ করেন, ‘কাপড়ের তৈরি মাস্ক এর ক্ষেত্রে একাধিক স্তর থাকতে হবে এবং বাধাহীনভাবে শ্বাস নেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই মাস্কের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি পুনঃব্যবহার যোগ্য। তবে পুনঃব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা ও হাত ধোয়ার অভ্যাস রাখতে হবে। এই দুটি অভ্যাস না থাকলে মাস্ক পড়েও লাভ নেই।’

এ সময় তিনি আরো জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৭০৯ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরো ২ হাজার ৯১১ জন। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৪৪৫ জনে।

তিনি ৫২টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ হাজার ৯০৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৭০৪টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৩৩ হাজার ৭৩টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৯১১ জনের দেহে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৫২৩ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১১ হাজার ১২০ জনে।

গত সোমবারের (১ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ জন মারা গেছেন। ১১ হাজার ৪৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৩৮১ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্ত- উভয় সংখ্যা তো বেড়েছেই, হয়েছে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ডও। এর আগে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল দুই হাজার ৫৪৫ জনের। যা জানানো হয় ৩১ মে’র বুলেটিনে। মৃত্যুর দিক থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানি। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৪০ জনের। সেটিও জানানো হয় ৩১ মে’র বুলেটিনে।

মঙ্গলবারের বুলেটিনে আরো বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনার সুস্থতার হার ২১ শতাংশ এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩৮৮ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৬ হাজার ২৪০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৬৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০৭ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৫০৬ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৮৫ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৭ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৩১হাজার ৮৪০ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৮হাজার ৫৪৫জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬৪ লাখ। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার। তবে সোয়া ২৯ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত