ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রান্তিক খামারিরা

  ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২০, ১৫:০৯

কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রান্তিক খামারিরা

প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের চরাঞ্চলের কয়েকশ’ ক্ষুদ্র চাষী ষাঁড় গরু পালন করেছেন। কোরবানি উপলক্ষ্যে এই গরু বিক্রি থেকে আসা লাভের টাকায় সংসারের খরচ চালান তারা। তবে করোনার কারণে এখন পর্যন্ত গরু কেনার জন্য বেপারি না আসায় ন্যায্য দামে গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে চিন্তিত প্রান্তিক পশু পালক ও খামারিরা।

বৈশ্বিক এই মহামারির কারণে সামনের দিনগুলোতে লকডাউন বা সামাজিক দূরত্ব রক্ষাসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ বাড়তেই থাকবে। এসব বিধিনিষেধের মধ্যে ক্রেতারা কতটুকু সাড়া দেবেন তা নিয়েই তাদের দুশ্চিন্তা। পর্যাপ্ত ক্রেতার অভাবে বাজার নাও জমতে পারে।

ময়মনসিংহ সদরের চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র চাষী নজরুল ইসলাম কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য গেল ১০ বছর ধরে ষাড় গরু লালন পালন করে আসছেন। এবারও তিনি দেশি জাতের ১০টি ষাড় মোটাতাজা করেছেন। প্রতিদিন তার খামারে গরুর পেছনে খাবার বাবদ প্রায় দুই হাজার টাকার মতো খরচ হচ্ছে।

তিনি জানান, কোরবানির ঈদের আর মাত্র এক মাসের মতো সময় থাকলেও এখনও গরু কেনার জন্য কোন বেপারি তার বাড়িতে আসেনি। করোনার প্রভাবে গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে চিন্তিত তিনি। তাছাড়া করোনার কারণে এবার ন্যায্য দামে গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও শঙ্কায় পড়েছেন তিনি।

চরলক্ষীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম গত ৪ বছর ধরে পাকিস্তানি শাহীওয়াল ষাঁড় লালন করছেন কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য। বর্তমানে ষাঁড়ের ওজন প্রায় ৭শ’ কেজির ওপরে। গত বছর তার ষাঁড়ের দাম উঠেছিল দেড় লাখ টাকা। বেশি লাভের আশায় বিক্রি না করে লালন করছিলেন এবারের ঈদে বেশি দামে বিক্রি করবেন বলে। কিন্তু করোনা তার মনে দুশ্চিন্তা এনে দিয়েছে।

শহিদুল ইসলাম জানান, এখনও কেউ গরু কেনার জন্য বাড়িতে আসেনি, এমনকি দামও করেনি। গেল বছরের কোরবানির ঈদে তার শাহীওয়াল ষাঁড়ের বেশ কদর ছিলো। প্রতিদিন খাবার বাবদ প্রায় ৩শ’ টাকার ওপরে খরচ আছে। গেল এক বছর ধরে বেশি লাভের আশায় এভাবে খাবার খাইয়ে এসেছেন। কিন্তু করোনার কারণে লাভতো দূরে থাক, ষাড় বিক্রি করে খরচ উঠবে কিনা এ নিয়ে চিন্তিত তিনি।

চাষী নজরুল এবং শহিদুলের মতো চরাঞ্চলের সব ক্ষুদ্র চাষীদের একই অবস্থা। করোনার প্রভাবে কোরবানির গরু কেনার জন্য এবার বাজারে ক্রেতা আসবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত চাষীরা।

চরলক্ষীপুর গ্রামের স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, আশপাশের চরের বেশকয়েকটি গ্রামের কয়েকশ’ ক্ষুদ্র চাষী প্রতিবছর কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য ষাঁড় লালন পালন করে আসছে। ঈদ উপলক্ষ্যে গরু মোটাতাজা করা বেশলাভজনক হওয়ায় দিন দিন চাষীরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে গরুর চাহিদা না থাকায় বাজারে ক্রেতা আসবে কিনা এটা নিয়ে চিন্তিত চাষীরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় বড় খামার আছে দেড়শ’ এবং ক্ষুদ্র চাষী আছে প্রায় ৪ হাজারের মতো।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, খামারি এবং চাষীদের গরু বিক্রি করার সহায়তা করতে উপজেলাভিত্তিক প্রশাসনের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম হাট-বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য কাজ করবে। চাষীরা তাদের ন্যায্য দামে পশু বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত