হরিণাকুন্ডুতে পানির নিচে হাজার হাজার বিঘা আবাদি জমি

ঝিনাইদহের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মুক্তার হোসেনের একমাত্র সম্বল মাত্র ২৬ কাঠা জমি। জমিতে যে ধান হতো তাই দিয়ে চলত সারা বছরের খাবার। কিন্তু সেখানে অবৈধভাবে পুকুর কাটার ফলে দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন যেন ফিকে হয়ে গেছে তার।

মুক্তার হোসেনের মতো হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভালকী, পায়রাডাঙ্গা, শিতলী ও জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবারের স্বপ্ন একইভাবে দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। এক সময়ের ধানি জমি এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। পুকুর কাটার ফলে চার হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় হিট স্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

উপায়হীন কৃষক পরিবারগুলো প্রতিকার পেতে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও তড়িৎ কোন প্রতিকার পায়নি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অবৈধভাবে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা একরকম নীরব ভূমিকায় রয়েছেন। প্রশাসনের এই নীরবতায় পুকুর মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

পায়রাডাঙ্গা গ্রামের আক্তারুজ্জামান জানান, তাদের গ্রামে ৮/১০ টি বিল রয়েছে। দুই মৌসুমে এই বিলে বিপুল পরিমাণ ধান উৎপন্ন হতো। কিন্তু পায়রাডাঙ্গা গ্রামের আইয়ূব মন্ডলের ছেলে ডালিম মন্ডল ও জব্বার মন্ডলের ছেলে দেলোয়ার হোসেন দলু মন্ডল যত্রতত্র পুকুর কাটছেন। ফলে গোটা বিলে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া শিতলী এবং জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের মাঠের শত শত বিঘা আবাদি জমিতে পুকুর কাটা হয়েছে।

গ্রামবাসির ভাষ্যমতে, পায়রাডাঙ্গা গ্রামের হাতিশুড়ো, মুচেইখালী, ট্যাবার মাঠ ও সঞ্জেরখালী মাঠ এখন পানির নিচে। সঞ্জেরখালী মাঠে সরকারি জমি ছিল দেড় বিঘা। সেখানে বিল ও খালের সংযোগ স্থানে ছিল একটি ব্রীজ। সেখানে পুকুর কাটায় ব্রীজের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি রাস্তায় কেউ চলাচল করতে পারছে না।

পুকুর মালিক ডালিম ও দলু জানান, তারা তাদের জমিতে পুকুর কাটছেন। পুকুর কাটার কারণে কোন কৃষকের ক্ষতি হলে তারা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেবেন।

এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিস সুলতানা জানান, আমি অসুস্থ থাকার কারণে অভিযোগটি পাইনি। তবে জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেছেন। আমি সরেজমিন তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তার সাথে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর