ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

একটু বৃষ্টি হলেই গৃহবন্দি গ্রামবাসী

  জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২০, ১৭:২৪

একটু বৃষ্টি হলেই গৃহবন্দি গ্রামবাসী

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের বামনগ্রামে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই গৃহবন্দি হয়ে পড়ে গ্রামবাসী।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি গ্রামের পাশেই কয়েকটি পুকুর খননের পর তারা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ায় এই ভোগান্তিতে পড়েছে তারা। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছরের এই ভোগান্তি যেন শেষ হবার নয় তাদের। এ ঘটনায় তারা কয়েক বছর আগে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও এর কোন সুরহা হয়নি।

এমনকি পরে আদালতে মামলা করা হলে আদালত সেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য পুকুর মালিকদের নির্দেশ দিলেও কিন্তু সেই নির্দেশ মানছে না প্রভাবশালী পুকুর মালিকরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের বামনগ্রামের সতেন চন্দ্র মালীর ছেলে নারায়ন চন্দ্র মালী, ঝড়– চন্দ্রের ছেলে জিতু চন্দ্রসহ কয়েকজন প্রায় ৫ বছর আগে ওই গ্রামের পাশেই কয়েকটি পুকুর কাটে। পুকুর কাটার সময় প্রশাসন থেকে বলা হয় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে পুকুর কাটতে। কিন্তু তারা পুকুর খননের পর পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না করায় একটু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তিতে পড়ে গ্রামবাসী। গ্রামবাসীরা বারবার বলা স্বত্বেও তারা প্রভাবশালী হওয়ায় এর কোন প্রতিকার হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটু বৃষ্টি হলেই গ্রামের অনেকের বাড়ির আঙিনায় বন্যার মত পানি উঠে যায়। এছাড়াও ডুবে যায় গ্রামের রাস্তা। ফলে বাড়ি থেকে বের হতে পারে না গ্রামবাসী। ইতিমধ্যেই দেয়ালে পানি লাগার কারণে ভেঙ্গে গেছে অনেক মাটির দেওয়াল। আর বৃষ্টির ফলে গ্রামের রাস্তাটি হাটু জলে ডুবে যায়। এছাড়াও আশেপাশের জমিতে সারাবছর পানি জমে থাকায় সেখানে শুধু ধান ছাড়া আর কোন ফসলই চাষ হয় না।

গ্রামবাসী রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আমাদের গ্রামের আশেপাশের সব জমিতে পটল, করলা, বেগুন, আলুসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ হতো। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালী নারায়ন চন্দ্রসহ আরও কয়জন পুকুর খনন করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন শুধু ধান ছাড়া আর কোন ফসল চাষ হয় না।

গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ সইমুদ্দিন আক্ষেপ করে বলেন, বৃষ্টির পানি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে হওয়ায় আমাদের ঘর-বাড়ি সব ভেঙে যাচ্ছে এজন্য আমরা প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত করি। পরে এমপি, ইউএনও, পুলিশ, চেয়ারম্যান সবাই আসছে কিন্তু কোন ব্যবস্থা হয় নাই।

গ্রামবাসী মাসুম, ইলিয়াস, রবিউল, হান্নান, জহরন বেগমসহ আরো অনেকে বলেন, পুকুর মালিকরা তাদের নিজের জমিতে পুকুর খনন করেছে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু পুকুর খনন করে গ্রামের পানি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এতে একটু বৃষ্টি হলে রাস্তাঘাট সব ডুবে যাওয়ায় ও বাড়ির উঠানে পানি উঠায় গৃহবন্দি হয়ে পড়ি আমরা। এছাড়াও প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে চাষ হয় না। শুধু মাত্র ধান চাষ হয়। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাজে আকুল আবেদন করছি আমাদের গ্রামে যেন পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হয়।

এ বিষয়ে পুকুর মালিকদের কারও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় জিন্দারপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, বিষয়টি আমি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোবারক হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত