ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নি পরিচয়ে ইউএনও’র চাকরি খাওয়ার হুমকি!

  শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২০, ১৯:১৫

প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নি পরিচয়ে ইউএনও’র চাকরি খাওয়ার হুমকি!

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর ইউএনও’র চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নি পরিচয় দেয়া শেখ মুন্নি নামে এক নারী।

শনিবার দুপরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউএনও আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, বালু উত্তোলন এবং সরবরাহে রাজি না হওয়ায় তাকে ওই হুমকি দেয়া হয়।

শেখ মুন্নির নাম ভাঙিয়ে ওই নারী এর আগেও আরো অপকর্ম করেছে বলে জানান ইউএনও।

শুক্রবার রাত ৯টায় ইউএনও তার নিজের ফেসবুক আইডিতে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকির বিষয় নিয়ে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। এ ধরণের হুমকির ঘটনায় সচেতন মহল তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদশা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। বর্তমান ইউএনও গেল বছর জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইউএনও হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছেন। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হিসাবে এবার সরকারের দেয়া শুদ্ধাচার পুরস্কারও পেয়েছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

বালু উত্তোলনের বিষয়ে যারা অবৈধ স্বার্থের সাথে জড়িত, তারাই ইউএনওকে এ ধরণের হুমকি প্রদান করেছেন। যারা এ কাজ করেছেন তারা সুস্থ মস্তিস্কের হতে পারে না বলে উল্লেখ করেন বদিউজ্জামান বাদশা।

নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হক বলেন, ইউএনও সাহেবের চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি ধৃষ্টতার শামিল। এ অপকর্মের সাথে জড়িতদের তিনি শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

নালিতাবাড়ী পৌর মেয়র আবু বকর বাক্কা বলেন, বর্তমান ইউএনও সাহেব যোগদান করার পর থেকে নালিতাবাড়ীর মানুষের মঙ্গলের জন্যই কাজ করে গেছেন। যদি কেউ তার চাকরি খাওয়ার হুমকি দিয়ে থাকে অবশ্যই সেটা নিন্দনীয় কাজ।

বালুদস্যরা উপজেলার ব্যাপক ক্ষতি করেছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, যদি তিনি (ইউএনও) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় আমাদেরকে সাথে রাখতে চান, তাহলে তার সহযোগী হিসাবে কাজ করবো।

এ বিষয়ে ইউএনও আরিফুর রহমান বলেন, প্রায় দুই তিন মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নি পরিচয় দেয়া শেখ মুন্নি ও চলচ্চিত্র অভিনেতা ড্যানি সিডাক তার সাথে দেখা করেন। ওই সময় তারা নালিতাবাড়ী থেকে গাজীপুরে বিপুল পরিমাণ বালু সরবরাহে তার সহযোগিতা চান। এ বিষয়টিতে তিনি অপারগতা জানিয়ে তাদেরকে বিদায় করেন। বালু উত্তোলনের বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসকের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে বলে তাদের জানান ইউএনও।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় তদবির ঠেকাতে নিজের ফোন বন্ধ রাখেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী শুক্রবার উপজেলার চারালি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত প্রায় দশটি মেশিন ধ্বংস করা হয়। জরিমানা করা হয় ৫০ হাজার টাকা। এ সময় তার সাথে থাকা বিজিবি কমান্ডার আলতাফ হোসেনের মোবাইল ফোনে রিং দিয়ে শেখ মুন্নির নাম ভাঙিয়ে যা-তা বলেন।

এ সম্পর্কে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে আরিফুর রহমান বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত