ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বেরিয়ে আসছে শাহেদের ভয়ঙ্কর সব তথ্য

  সুশান্ত সাহা

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২০, ২২:০১  
আপডেট :
 ১২ জুলাই ২০২০, ২৩:১১

বেরিয়ে আসছে শাহেদের ভয়ঙ্কর সব তথ্য
ফাইল ছবি

রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৬ হাজার মানুষকে করোনা টেস্ট না করেই ভুয়া সনদ দেওয়া, প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে প্রভাব খাটানোর, এমএলএম (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং) ব্যবসা, ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা, চাকরি দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মের তথ্য বেরিয়ে আসছে।

সূত্রে জানা যায়, করোনার ভুয়া সনদ দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার রাতে শাহেদসহ রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছে র‌্যাব। এ নিয়ে শাহেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগে ৩৩টি মামলা হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম তার শাহেদ করিম। বর্তমানে নাম ব্যবহার করতেন মো. শাহেদ। সাতক্ষীরা জেলার এক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান প্রতারণাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এখন শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। নিজেকে কখনো সেনা কর্মকর্তা মেজর শাহেদ, কখনো প্রশাসনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। তুচ্ছ কারণে উত্তরায় শাহেদের টর্চার সেলে যখন-তখন চলত নির্যাতন। কোনো পাওনাদার গেলেও তার নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই মিলত না।

রিজেন্টের কর্ণধার শাহেদের এই টর্চার সেলসহ জীবনের নানা অজানা কাহিনী বলছিলেন তার সাবেক কয়েকজন সহকর্মী। বিভিন্ন সময় হয় তারা নিজেরা চাকরি ছেড়েছেন অথবা তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

২০১১ সালে ধানমণ্ডির ১৫ নম্বর সড়কে একটি এমএলএম কোম্পানি খোলেন শাহেদ। যার নাম ছিল বিডিএস ক্লিক ওয়ান। মূলত এই এমএলএম কোম্পানির মাধ্যমেই তার উত্থান শুরু। এমএলএম কোম্পানি খুলে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তখন শাহেদ নিজেকে মেজর ইফতেখার করিম চৌধুরী নামে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয় দেয়ায় তার বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় দুটি ও বরিশালে একটি মামলা রয়েছে। মামলার পর কয়েক বছর তিনি ভারতের বারাসাতে সপরিবারে আত্মগোপন করে থাকেন। পরে নানা কৌশলে মামলাগুলো থেকে জামিন নিয়ে দেশে ফিরে এসে নতুন কারবার শুরু করেন।

‘বিডিএস কুরিয়ার সার্ভিস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে অনেকের কাছ থেকে শাহেদ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে উত্তরাসহ বেশ কয়েকটি থানায় ৮ মামলা হয়েছে। মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা ঋণ নেন শাহেদ। সেখানে দাখিল করা নথিপত্রে নিজেকে কর্নেল (অব.) ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী পরিচয় দেন। এই ভুয়া পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র দাখিল করায় তার বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা চলছে।

এদিকে বহুল আলোচিত করোনাভাইরাসের পরীক্ষা জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ার পর থেকেই পলাতক আছেন রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম। সবার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে এখন তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। তার ব্যাপারে সীমান্তসহ সব জায়গায় অ্যালার্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে র‌্যাব। এছাড়াও একাধিক সংস্থা শাহেদের অবস্থান জানতে নজরদারি বাড়িয়েছে।

র‌্যাবের মুখপাত্র ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসিক বিল্লাহ বলেন, শাহেদকে গ্রেপ্তার করতে র‌্যাবের একাধিক টিম কাজ করছে। যেকোনো সময় গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত