ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

এটি একটি স্কুল, পুকুর না!

  কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২০, ১৯:৫৪

এটি একটি স্কুল, পুকুর না!

চারিদিকে পানি আর পানি। দেখলে মনে হচ্ছে এ যেন একটি পুকুর। আসলে পুকুর না, এটি একটি স্কুল। এটি এখন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নে সিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠের চিত্র। এটিই এখানকার একমাত্র খেলার মাঠ।

এখানে বছরের বেশিরভাগ সময়ই জলাবদ্ধতা থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকে এ মাঠটি। মাঠের এ অবস্থার জন্য বন্ধ থাকে খেলাধুলা। নিয়মিত খেলতে না পারায় হতাশ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও মহল্লার খেলোয়াড়রা।

তবে এটি বন্যা কবলিত কোনো এলাকার স্কুল মাঠের দৃশ্য না। বিদ্যালয় মাঠটিতে যেন কোথায় পা ফেলার জায়গা নেই। জলাবদ্ধতা শুধু এই এলাকার স্কুলমাঠের চিত্র নয়। অত্র ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার সবকটি স্কুলমাঠের চিত্র একই।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর খেলার মাঠ উন্নয়নের টাকা আসলেও কোনো কাজ হয় না। সব টাকাই আত্মসাৎ করা হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্থানীয় এমপির টি-আর বরাদ্দকৃত ৪৩ হাজার টাকা এসেছিলো। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। টাকা কোথায় যায় প্রধান শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সভাপতি ভালো জানেন।

‘মাঠ শুকনো থাকলে যুবসমাজ ব্যস্ত থাকে খেলাধুলায়। ফলে মাদকের ছোবল থেকে তারা রক্ষা পায়। যত বেশি ক্রীড়া চর্চা হবে, ততো বেশি যুবসমাজ মাদক থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু এই মাঠের পানি দেখলে মনে হয় এটি একটি পুকুর। এই মাঠটি সংস্কার করা না হলে এলাকার যুবসমাজ মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে।’ কর্তৃপক্ষের কাছে মাঠটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।

সিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুফিয়া খাতুন বলেন, স্কুলমাঠে মাটি ভরাটের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্থানীয় এমপির টি-আর বরাদ্দকৃত ৪৩ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু সেই টাকার সম্পূর্ণ কাজ হয়নি। নামমাত্র কয়েকটি ট্রলি বালু স্কুলমাঠে দিয়ে সব টাকা আত্মসাৎ করেছে জাসদ নেতা জালাল। তারপর তার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি পাশ কাটিয়ে যান।

এ ব্যাপারে স্থানীয় জাসদ নেতা জালাল বলেন, আমি কিছু কাজ করেছি। কাজ না করলে কিছুই তো করার ছিলো না। এছাড়া আর কিছু বলতে পারবো না।

মিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, আমি বিষয়টা শুনেছি। সেইসাথে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি প্রতিবছরই বর্ষার সময় পানিতে ডুবে যায়। ইতোপূর্বে মাঠটি ভরাট করা হয়েছিলো, যা যথেষ্ট না। তবে ভালো করে ভরাট করার প্রয়োজন।

ধুবইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান মামুন বলেন, বিদ্যালয়টি পানিতে তলিয়ে গেছে। কিভাবে জরুরিভাবে পানি নিষ্কাসন করা যায় তার ব্যবস্থা করবো।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, এটা আমার জানা ছিলো না। তবে দ্রুত এ জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত