ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হন আবাসন ব্যবসায়ী আবুল খায়ের!

  সুশান্ত সাহা

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২০, ১৯:৪৩

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হন আবাসন ব্যবসায়ী আবুল খায়ের!

ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে আর্থিক দ্বন্দ্ব, পূর্ব শত্রুতাকে সামনে রেখে আবাসন ব্যবসায়ী আবুল খায়ের হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নেমেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে হত্যায় জড়িত সন্দেহভাজন হিসেবে এক জনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নির্মাণাধীন যে ভবনে আবুল খায়েরের মরদেহ পাওয়া গেছে, তিনিসহ মোট ৯ জন সেটার মালিক। চারতলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাইয়ের পর গত ফেব্রুয়ারি থেকে ভবনের কাজ বন্ধ ছিলো।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকারীরা পূর্ব পরিচিত। নিহত আবুল খায়ের মাথায় পেছনে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আবুল খায়ের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এন ব্লকে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির নয়তলা ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে আবুল খায়েরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে সন্ধ্যায় নিহত আবুল খায়েরের মেয়ে খাদিজা আক্তার স্বর্ণা বাদী হয়ে ভাটারা থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

নিহত আবুল খায়ের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত সজীব বিল্ডার্স নামে গৃহ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বছর দশেক আগে ছেলের নামেই আবাসন প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন আবুল খায়ের।

স্বজনদের দাবি, কিছুদিন আগে কেনা একটি জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। হত্যার আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবুল খায়েরকে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে আনা হয়।

নিহতের স্ত্রী রুপালি আক্তার জানান, পরিবারের সঙ্গে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এফ ব্লকের ২১ নম্বর সড়কের ৬৯২ নম্বর ভবন জালাল গার্ডেনের অষ্টম তলায় থাকতেন আবুল খায়ের। সাধারণত রাত ৮টার মধ্যেই বাসায় ফিরতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি। রাত ৮টার পর ফোন দিয়ে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর রাতভর সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও স্বামীর সন্ধান পাননি রুপালি। রাতেই বিষয়টি ভাটারা থানা পুলিশকে জানান তিনি। এরপর গতকাল ভোরে খুঁজতে গিয়ে এন ব্লকে নির্মাণাধীন ওই ভবনের দ্বিতীয়তলায় তার হাত-পা বাঁধা লাশ পান স্বজনরা।

নিহতের ছোট ভাই আবদুল বারী বাবলু বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হন আবুল খায়ের। পরে তার রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারো শত্রুতা ছিল না। তাই কে বা কারা কেন তাকে হত্যা করল, তা বুঝতে পারছি না। তবে আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে কিছুদিন আগে তিনি জমি কিনেছিলেন। ওই জমি নিয়ে একটি পক্ষের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্তে একাধিক টিম কাজ করছে। ইতিমধ্যে নিহতের ব্যবসায়িক অংশীদারসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কার ফোন পেয়ে আবুল খায়ের বাসা থেকে বের হন এবং হত্যায় তার সম্পৃক্ততা আছে কি না এ ধরনের সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ‘নিহতের মাথায় পেছনের দিক থেকে কিছু দিয়ে জোরালো আঘাত করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হওয়া যাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত