ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

তদন্ত করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার

শিবপুরের ইউএনওর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

  নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২০, ১৮:৩০

শিবপুরের ইউএনওর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নরসিংদী সার্কিট হাউজে বুধবার দিনব্যাপী ইউএনও’র বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের পরিচালক এম ইদ্রিস সিদ্দিকী (যুগ্ম-সচিব, স্থানীয় সরকার)।

এ সময় শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হারুনুর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ সরোয়ার ভূঞা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাপসী রাবেয়া, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: মেরাজুল হক, মো: মাছিহুল গণি স্বপন, আবুল হারিস রিকাবদার, খন্দকার হাসান উল সানি এলিছ, মো: বেনুজির আহমেদ, মো: নাদিম সরকার, মো: তরুন মৃধা, মো: রাসেল আহমেদ, মো: মজিবুর রহমান সরকার, সংরক্ষিত সদস্য যথাক্রমে তাছলিমা খানম, বিলকিস রানী, আফিয়া বেগম, শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঞা রাখিল, ইউএনও অফিসের কর্মচারী জাকির হোসেন এবং ১৬ জন ঠিকাদারসহ মোট ৩২ জনের বক্তব্য শোনেন তদন্ত কর্মকর্তা।

অভিযোগকারীরা বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ুন কবির শিবপুরে যোগদানের পর থেকে পরিষদের উন্নয়ন তহবিলের আওতায় পরিষদের সিদ্ধান্ত থাকা স্বত্বেও জনস্বার্থে কোন উন্নয়নমূলক কার্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেনি। বরং বিভিন্ন জটিলতা তৈরী করে উন্নয়নমূলক কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ নির্দেশিকা না মেনে নিজের ইচ্ছেমত নিম্নমানের বাসগৃহ নির্মাণ ও অর্থ আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগকারীরা আরও বলেন, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে হাট-বাজার থেকে প্রাপ্ত ইজারালব্ধ আয় ও ব্যয়ের হিসাব উপজেলা পরিষদের সভায় অদ্যাবদি উপস্থাপন করেননি। তিনি আইন, বিধিমালা ও নীতিমালার কোনো তোয়াক্কাই করেন না। তিনি হাট-বাজার সমূহের ব্যবস্থাপনা, ইজারা পদ্ধতি এবং তা হতে প্রাপ্ত আয় বণ্টন সম্পর্কিত নীতিমালা অনুসরণ না করে গড়বাড়ী বাজার অস্থায়ী পশুরহাট, সোনাকুড়া বাজার অস্থায়ী পশুরহাট, কামরাব বাজার অস্থায়ী পশুরহাটের অনুমোদন দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদপ্তরের আওতায় বিশেষ বরাদ্দের টিআর, কাবিখা ও অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নে ও শিবপুর পৌরসভার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনেও অবহেলা করেছেন। দাযিত্ব পালনের অবহেলা করায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রায় ৩২ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজের টাকা তামাদি হয়ে যায়, বলেন অভিযোগকারীরা।

এছাড়াও শিবপুর উপজেলার ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ১২ থেকে ১৫ ভাগ ঘুষ না দিলে ঠিকাদারি কাজের বিল ইউএনও আটকে রাখেন এবং উল্লেখিত ঘুষের টাকা পরিশোধের পর ঠিকাদারি বিল পরিশোধ করেন। তাছাড়া ঠিকাদারি লাইসেন্স প্রতিবছর নবায়ন করার পরও বছরে একটি মাত্র টেন্ডার পান। বাকী ৯০ ভাগ কাজ গোপনে টেন্ডার বিহনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসককে নিয়ে কাজ করে থাকেন। এতে ঠিকাদাররা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ূন কবিরের বিভিন্ন অনৈতিক ও দুর্নীতির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: হারুনুর রশীদ খান ৫টি অভিযোগ উত্থাপিত করেন।

শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ুন কবিরের সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও তার প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের পরিচালক এম ইদ্রিস সিদ্দিকী (যুগ্ম-সচিব, স্থানীয় সরকার) সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত