ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪০ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘কমিশন বাণিজ্যে’ ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত

  পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:১৫

‘কমিশন বাণিজ্যে’ ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত

পিরোজপুরের নাজিরপুরে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) স্বপ্না রানী মৃধার ব্যাপক কমিশন বাণিজ্যের কারণে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার স্বামী হিমাদ্রী শেখর মন্ডলের নিয়ন্ত্রণে নির্ধারিত দালালচক্রের মাধ্যমে এ ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। এ কারণে চলতি মৌসুমে কার্ডধারী সাধারণ কৃষকরা ধান দিতে পারেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতি টন ধানের জন্য এক হাজার থেকে ২ হাজার আর প্রতি টন চালের জন্য নেয়া হয় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর এভাবে প্রতি মৌসুমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

তবে স্বপ্না রানী মৃধা ও তার স্বামী হিমাদ্রী শেখর মন্ডল তাদের বিরুদ্ধে আনিত ওই কমিশন ও সিন্ডিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

হিমাদ্রী শেখর মন্ডল জানান, তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে কেউ তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করতে পারে। তবে তার আত্মীয়র অনেকে ধান দেয়ার জন্য কার্ড পেলেও তাদেরকে তিনি দুর্নামের ভয়ে ধান দিতে নিষেধ করেছেন বলে দাবি করেন।

উপজেলার শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়নের চলিশা গ্রামের কৃষক ফারুক হাওলাদার জানান, তিনি চলতি মৌসুমে লটারির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কৃষক হিসাবে খাদ্যগুদামে ধান দিতে যান। গুদামরক্ষকসহ সেখানে থাকা গুদামের লোকজন ওই ধান ভেজাসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফেরত দেন।

অভিযোগ রয়েছে, একই অবস্থা সাধারণ কৃষকের জন্য। তাই এমন হয়রানি এড়াতে কৃষক ধান দিতে আসেনি। ওসিএলএসডি’র স্বামীর নেতৃত্বে স্থানীয় দেবাশ্রয় হালদার জনিসহ ৫ থেকে ৬ জনের একটি দালালচক্র চলতি বছরের এ ধান সরবরাহ করেন। এ চক্রটি কৃষকদের কাছ থেকে কার্ড হাতিয়ে নিয়ে তারা নিজেরাই ধান কিনে দিয়েছেন।

উপজেলার শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়নের ভীমকাঠী গ্রামের কৃষক মো. হাফিজুর রহমান জানান, তিনি চলতি মৌসুমে খাদ্যগুদামে ৬ টন ধান দিয়ে প্রতি টনের জন্য ওসিএলএসডিকে ১ হাজার টাকা করে ৬ হাজার টাকা দিয়েছেন।

খাদ্যগুদামে চাল দেয়ার জন্য অনুমোদিত একাধীক মিল মালিক জানান, প্রতি টন চালের জন্য ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার এক মিল মালিক জানান, ওসিএলএসডি আমার ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ার পরও সাড়ে ৫ টন চালের জন্য ১১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৩৮৪ মেট্রিক টন রোরো ধান ও ৯৬৬ মেট্রিক টন চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৫২ মেট্রিক টন ধান ও ৩৫৪ মেট্রিক টন ৭১০ কেজি চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া গত আমন ধানের মৌসুমে ৭৮০ মেট্রিক টন ধান ও ১০৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, এসব ধান ও চাল থেকে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা কমিশন নেয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি এ ধানের দাম এখন বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ধান দিচ্ছেন না। এমনকি দালালচক্রও ধান দতে পারছে না।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের জন্য গত ৩০ আগস্ট সরকার নির্ধারিত শেষ তারিখ থাকলেও পরে তা আবার বর্ধিত করে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত