ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

সৈকতের বেলাভূমিজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্লক-কংক্রিট

  উত্তম হাওলাদার, কলাপাড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:২১

সৈকতের বেলাভূমিজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্লক-কংক্রিট

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকতে যত্রতত্র পড়ে থাকা পরিত্যক্ত ব্লক, কংক্রিট, ইট, সুরকি ও গাছের গুঁড়ি এখন পর্যটকদের কাছে বিপদজনক। জোয়ারের সময় পর্যটকরা সমুদ্রে গোসলে নামলে প্রতিনিয়ত দুঘর্টনার কবলে পড়ে।

সৈকতে ওঠা-নামা সম্মুখভাগ জিরো পয়েন্টসহ প্রায় ১শ’ মিটার বেলাভূমিতে এখন দৃশ্যমান। দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও পৌরসভার এগুলো অপসারণ করার কথা থাকলেও তারা দেখে না দেখার ভান করে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ জোনটিতে কোন প্রকার সর্তকতামূলক বা নির্দেশনামূলক চিহ্ন না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আগত পর্যটকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রচণ্ড ঢেউয়ের ঝাপটায় বালু ক্ষয়ে সম্প্রতি বালুর ওপর জেগে উঠেছে পরিত্যক্ত ব্লক, কংক্রিট, ইট, সুরকি ও গাছের গুড়ি। ঝড়-জলোচ্ছাস ও ঢেউয়ের তাণ্ডবে উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। গাছ আপসরণ হলেও গুঁড়িগুলো পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। এতে পর্যটকদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের প্রবেশদ্বারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর অর্থায়নে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট কাম রেস্ট হাউস ২০০৭ সালের নভেম্বরে সুপার সাইক্লোন সিডরের আঘাতে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। পরে এলজিইডি ওই ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি নিলামে বিক্রি করে দেয়। এ ভবনটির বেশকিছু ভাঙা অংশ সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এর ফলে সৈকতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে হাটাচলা করতে পারছে না। প্রতিনিয়তই আঘাত পাচ্ছে পর্যটকরা- এমন আভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।

ফটোগ্রাফার রুবেল জানান, পর্যটকদের এমন বিড়ম্বনা থেকে নিস্তার দিতে তারা নিজেদের উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বাঁশ পুতে লাল কাপড় টানিয়ে দিয়েছিলেন। প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে তা এখন আর নেই।

পর্যটক ফারজানা বলেন, জোয়ারের সময় সৈকতে গোসল করতে গিয়ে কংক্রিটের ভাঙা অংশে ডান পা কেটে গেছে। পাঁচদিনের ট্যুরে এসে আহত হয়ে ওইদিনই পরিবারের কাছে ফিরতে হয়েছে।

পর্যটকদের কথা বিবেচনায় রেখেই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।

ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সেক্রেটারি জেনারেন মো. আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, সৈকতের সম্মুখভাগে পড়ে থাকা কংক্রিট খণ্ডগুলো প্রমাণ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন পর্যটকবান্ধব নয়। জোয়ারের সময় সমুদ্রে গোসল করতে নেমে প্রতিদিনই কোন না কোন পর্যটক আহত হচ্ছে। এছাড়া যত্রতত্র পড়ে থাকা পরিত্যক্ত ব্লক, কংক্রিট, ইট, সুরকি ও গাছের গুঁড়ি সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এগুলো অপসারনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

কুয়াকাটার পৌর মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা বলেন, অবিলম্বে সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কংক্রিট খণ্ডগুলো সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, গত বছর আমরা কিছু ভাঙা অংশ অপসারণ করেছিলাম। চলতি বছর আবারও বালু নিচের চাপা পড়া কংক্রিট ও ব্লক ক্ষয়ে বেলাভূমিতে জেগে ওঠেছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের চলতি দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক বদরুল কবির বলেন, সৈকতের সম্মুখভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ওই স্থানে পর্যটকদের নামতে নিরুৎসাহিত করলেও পর্যটকদের মধ্যে বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হয়। ট্যুরিস্ট পুলিশের ওই কর্মকর্তা পরিত্যক্ত ব্লক, কংক্রিট, ইট, সুরকি অপসারণের তাগিদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, পর্যটকদের সমস্যা নিরসনে পড়ে থাকা ওইসব কংক্রিট ও ব্লকগুলো পাউবোর সাথে কথা বলে অচিরেই অপসারণ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত