ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

যতবার থানায় ঢুকেছি, ততবার বাইরে যেতে বলেছে

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:১৩  
আপডেট :
 ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:২৪

যতবার থানায় ঢুকেছি, ততবার বাইরে যেতে বলেছে

পুলিশের কাছে বিচার চেয়ে না পেয়ে এসএসসি পাস এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীর নাম বিউটি মন্ডল (১৭)। সে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছী গ্রামের নিতাই মন্ডলের মেয়ে।

এ বছর কলাগাছী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় ছিলো। বুধবার দুপুরে ঘরের আড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করে।

পরিবারের অভিযোগ, নীলনদী বিউটি নামে একটি আইডি থেকে শিক্ষার্থী বিউটি মন্ডলের একটি বিবস্ত্র ছবি দিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা লেখা হয়। সাথে বিউটি মন্ডলের মোবাইল নম্বরও দেয়া হয়। এ বিষয়টি অজ্ঞাত এক ব্যক্তি বিউটির বাবা নিতাই মন্ডলের ফোন করে মেয়ের ফেসবুকে এ ধারনের পোস্ট করা ছবির বিষয়ে জানায় এবং ফেসবুকের একটি আপলোড হওয়া আপত্তিকর ছবির একটি লিংকও দিয়ে দেয়। যা ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

বিষয়টি জানার পর বিউটি মন্ডলের বাবা নিতাই মন্ডল গত ৭ সেপ্টম্বর তালা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে স্থানীয় কলাগাছী গ্রামের জগদীশ রায়ের ছেলে মৃত্যুঞ্জয় রায় (২০) এর নাম উল্লেখ করা হয়।

নীলনদী বিউটি আইডিটি মৃত্যুঞ্জয় রায় খুলে এ ধরনের আপত্তিকর ছবি পোস্ট করেছে বলে বিউটির বাবা পুলিশকে জানায়। কিন্তু তালা থানার পুলিশ কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় লোকলজ্জাই ক্ষোভে দুঃখে বিউটি মন্ডল আত্মহত্যা করে এমন অভিযোগ করলেন বিউটির বাবা কৃষক নিতাই মন্ডল।

বিউটির মা আক্ষেপ করে বলেন, 'বারবার বলিছি জগদিশির ছেলি আমার মেয়িডারে বিশাল যন্তনা দিতিছে। নেটে ... ছবি ছেড়িছে। কুপ্রস্তাব দিতিছে। কেউ তার লাগামডা টেনলো না। আমার ভালো লিখাপড়া করা মেয়িডা গুলায় দড়ি দে মুরলো। পোরোশাসন তারে এখনো ধইরলো না। ওরে ভগবান, এই দেশে গরিবের জন্যি কেউ নিই রে, কেউ নিই।'

অনীষা মণ্ডল বলেন, 'লিখিত অভিযোগ করার পরও পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা বারবার থানায় গেছেন। কিন্তু ওসি কোনো কথা শুনতে চাননি। বরং থানা থেকে তাদের বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। যতবার ঢুকিছি, ততবার থানার বাইরি যেতি বলিছে। মানুষ হতি চাইলো মেয়িডা আমার।'

বিউটির এক আত্মীয় বলেন, 'ওসি-দারোগারা খুব রাগ দেখাত, যে কারণে থানায় ঢুকতে আমাদের খুব ভয় লাগত।'

তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল জানান, আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়েছে।

তবে তার বিরুদ্ধে তদন্তে পাফিলতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ওসি বলেন, ৭ সেপ্টম্বর অভিযোগ পেয়ে সেটি তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দোষিকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সাতক্ষীরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (তালা-পাটকেলঘাটা সার্কেল) হুমায়ূন কবির জানান, তালা থানা পুলিশ ৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ পেয়েও কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের কোন গাফলতি থাকলে সেটি চিহ্নিত করা হবে। একইসাথে স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার বিষয়ে মামলা নিয়ে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত