ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

করোনা আতঙ্কে উদ্বিগ্ন রংপুর অঞ্চল, মৃত্যু বেড়ে ২০০

  রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:০০

করোনা আতঙ্কে উদ্বিগ্ন রংপুর অঞ্চল, মৃত্যু বেড়ে ২০০
প্রতীকী ছবি

হাট-বাজার, দোকানপাট কিংবা পাড়া-মহল্লা, গণপরিবহন বা ছোট-বড় বিপণিবিতান, ফুটপাত সবখানেই মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অন্য যে কোন বছরের ন্যায় স্বাভাবিকভাবেই চলছে মানুষ। দেশে-বিদেশে করোনার ভয়াল থাবা চলছে, এ নিয়ে খুব একটা সতর্ক নেই সাধারণ মানুষ। যেন সবকিছু স্বাভাবিক। এমন অবস্থায় শনিবার পর্যন্ত রংপুরে করোনার মারা গেছে দুইশ' জন। আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ জন।

স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরুত্ব মেনে না চলা এবং এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় চরম উদ্বিগ্ন নাগরিক কমিটি। তারা বলছেন, সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় মনিটরিং টিম জোরদার না করলে রংপুর হবে সবথেকে ভয়াবহ জায়গা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক থাকলেও সেই মাস্ক আবার থুতনির নিচে। নেই কোন ব্যক্তিগত ও সামাজিক দূরুত্ব। স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না কেউ। যে যার মতো হাট-বাজার করে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিচ্ছে।

তবে শহর-নগরের হাট-বাজারগুলোর সামনে ‘নো মাস্ক, নো বাজার’ সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও সেগুলো কথার কথা বা লাগানোর প্রয়োজন তাই লাগানো হয়েছে। এই আদেশ, শাসন বা অনুরোধ কেউ মানছেন না। তদারকি করারও কেউ নেই। সে কারণে ঝুঁকিতে বাজারগুলো। একই অবস্থা গণপরিহনগুলোতেও।

গত শুক্র ও শনিবার রংপুরের বিভিন্ন রুটে চলাচলরত গণপরিবহনগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, সেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। গাড়িতে ওঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে না। গাড়ির ভেতরে থাকা অনেক যাত্রীর মুখেও মাস্ক নেই।

রংপুর সিটি বাজারে কাঁচা তরকারি বিক্রি করেন আব্দুস সালাম, কিন্তু তার মাস্ক নেই। কিন্তু তার কাছে মানুষজন আসছেন। বেশ কেনাকাটা চলছে। বাজারের প্রায় অধিকাংশ মানুষের এই অবস্থা। গাদাগাদি আর ঠেলাঠেলি স্বাভাবিক ঘটনা।

রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা খোঁজ নিয়ে একই চিত্র পাওয়া গেছে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন দিনাজপুরে ৭০ জন। এরপরেই আছে রংপুর জেলা। এখানে ৪৩ জন মারা গেছেন। এছাড়া পঞ্চগগড়ে ১০ জন, নীলফামারীতে ২০ জন, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় ১৪ জন করে, ঠাকুরগাঁওয়ে ২০ এবং লালমনিরহাটে ৯ জন।

এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬২ হাজার ২৩ জনের। পজিটিভ হয়েছেন ১১ হাজার ১৩২ জন।

এদিকে করোনা নিয়ে আগের মতো মনিটরিং দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ নাগরিক কমিটির।

সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন রংপুর করোনা প্রতিরোধ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফকরুল আনাম বেঞ্জু। তিনি মনে করেন, মানুষ যেভাবে ঘর থেকে বের হচ্ছে তা সত্যিই বিপদজনক। করোনা নিয়ে মানুষের এতো উদাসীনতা কেন হলো তা আমার বোধগম্য নয়, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির যে প্রচার প্রচারণা হতো সেটি কমে গেছে। যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সতর্ক করতে না পারে, তাহলে আমাদের সবার জন্য এক বড় ধাক্কা সহ্য করার মাসনিকতা এখনই তৈরি করতে হবে।

করোনা চলে গেছে এই ভাবনা থেকে দূরে এসে অন্যকে নয়, নিজে নিজেই সচেতন হতে হবে।

ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. সুলতান আহাম্মেদ জানিয়েছেন, মানুষকে সচেতন হতে হবে। মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে এই করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন হবে। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত