বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে মসজিদে আগুন, দাবি তিতাসের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:৫৫ আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:১৩
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদটি নির্মাণে কোনো নিয়মই মানা হয়নি। অবৈধ গ্যাস সংযোগের রাইজার ও পাইপ লাইনের ওপর নির্মাণ হয়েছিল মসজিদটি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গ্যাসের লাইন। ক্ষতিগ্রস্ত লাইন থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদ জমা হয়। অবৈধভাবে নেয়া বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে আগুন লাগলে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণ হয়েছে বলে তিতাসের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে এসি বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গঠিত তিতাসের অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় এ কথা জানানো হয়।
তদন্ত কমিটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। এ সময় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদন বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখনও প্রতিবেদন নিয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে দায়িত্ববোধ থেকে কেউ এড়াতে পারবে না। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে তিতাসের ৭ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে আপাতত দৃষ্টিতে প্রতিবেদনটি সত্য মনে হচ্ছে। আমরা পরবর্তীতে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব। ডিপিডিসি সম্পর্কে তদন্ত চলছে। কীভাবে দীর্ঘদিন অবৈধ সংযোগ নিয়ে একজন গ্রাহক চলতে পারে। তদন্তের ওপর ভিত্তি করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আগের থেকে পরিস্থিতি দিন দিন ভালো হচ্ছে।’
তদন্ত কমিটির প্রধান আব্দুল ওহাব বলেন, ‘তিতাসের নিয়ম-কানুন না মেনে, অবহিত না করে গ্রাহক তাদের নিজ উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে রাইজারগুলো নরমালভাবে প্লাগ এবং সকেট দিয়ে স্থানান্তর করেছে। এটা ১৯৯৮ সালের ঘটনা। আমাদের এই লাইনগুলো ১৯৯৬ সালে দুর্ঘটনাস্থলের নিচে বসানো ছিল, তারা আমাদের নিয়ম না মেনে লাইনের নিচ দিয়ে বেইজমেন্ট করেছে। এছাড়া ২০০০ সালে নিয়ম না মেনেই মসজিদ নির্মাণ করে। মসজিদটি তৈরি করার সময়ই তারা লাইনগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘লিকেজ না হওয়া পর্যন্ত চিহ্নিত করা যায় না। যেহেতু আমাদের গ্যাস লাইন অবৈধভাবে স্থান্তরিত করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে মসজিদ নির্মাণের সময় পুরাতন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখান থেকে লিকেজ তৈরি হলে গ্যাস লিক হতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মসজিদের ফ্লোরে ৬/৮ সিসি ঢালাই না থাকায় সেই গ্যাস মসজিদের এসি চেম্বারে গিয়ে জমে। সেখানে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প লাইন চালু করলে বিদ্যুৎ স্পার্ক করে এই ঘটনা ঘটে বলে আমরা মনে করছি।’
আরও পড়ুন
মসজিদে এসি বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১
যেসব কারণে ঘটে এসি বিস্ফোরণ, রক্ষা পাওয়ার উপায়
এসি নয় বিস্ফোরণ গ্যাস লাইন থেকে: ফায়ার সার্ভিস
মসজিদ এসি বিস্ফোরণ, ৩ তদন্ত কমিটি গঠন
ফতুল্লায় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ, বহু হতাহতের শঙ্কা
বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই