ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

নিজের চিকিৎসা নিজেই করলেন কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী!

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:৪০

নিজের চিকিৎসা নিজেই করলেন কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী!

নিজের দাঁত ব্যথা নিয়ে যেখানে বিশ্রামে থাকার কথা ছিল সেখানে হাতে ক্যানোলা লাগানো একজন স্বাস্থ্যকর্মী অসুস্থ রোগীদের অবিরত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গাইনী বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স হেনা আক্তার।

ওই হাসপাতালে গাইনী বিভাগের মোট ১১ জন সিনিয়র নার্সিং কর্মকর্তা রয়েছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হেনা আক্তার রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। ওই সময় নিজের চিকিৎসা নিজেই করছিলো এবং ভর্তিকৃত রোগীদের তিনি সেবা দিচ্ছেন।

নার্স হেনা আক্তার বলেন, গত ৩ দিন যাবত দাঁতের ব্যথায় ভুগেছিলাম। কোন ওষুধ খেয়ে ব্যথা যাচ্ছিল না। তাই গতকাল ডিউটিতে এসে নিজের বাম হাতে ক্যানোলা করি। নিজের হাতে নিজেই ইনজেকশন দিয়েছি। আমি অসুস্থ হলেও ছুটির প্রয়োজন মনে করেনি। দাঁত ব্যথা হলেও তেমন সমস্যা ছিল না আমার। তাই নিজের চিকিৎসা নিতে সমস্যা হচ্ছিল না। নিজের চিকিৎসাও নিচ্ছি রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে পারছি।

তিনি বলেন, মুখে ওষুধ খেয়ে ব্যথা যাচ্ছিল না। গতকাল দুপুরে ডিউটিতে আসলে বাম হাতে ক্যানোলা করি। আমার বিশেষ কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমি আমার দেশের মানুষের প্রতি এবং রোগীদের প্রতি আন্তরিক হয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

তবে গাইনী বিভাগের ইনচার্জ সুবিতা রানী দাস আমাকে ছুটিতে যেতে বললেও আমি ছুটি নেয়নি। নিজের হাতে ক্যানোলা লাগানো দেখে এ বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্সরাও আমার সেবা যত্ন করছেন এবং আমাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করছেন।

ওই বিভাগে ভর্তি হওয়া রোগীর আত্মীয় নাজনীন বলেন, সিস্টার নিজে অসুস্থ হয়ে আমাদের যেভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবীদার। আমরা অনেকেই উনাকে জিজ্ঞেস করি সিস্টার আপনি অসুস্থ ছুটি নিতে পারেন। কিন্তু তিনি বলেন আপনাদের সেবা করবে কে! এতে আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, সে অসুস্থ হয়েও যেভাবে রোগীদের সেবা দিচ্ছে সেটি একটি ভাল দিক। ওই নার্সকে ছুটির জন্য বলা হয়েছিল কিন্তু সে ছুটি প্রয়োজন মনে করেনি। তার সমস্যাটা জটিল ছিল না।

তিনি আরো বলেন, আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা কখনো নিজের অসুস্থতার কথা চিন্তা করে না। সব সময় কিভাবে রোগীদেরকে সুস্থ করা যায় সে কাজটা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবায় যে একমাত্র ধর্ম তা মনে করি।

উল্লেখ্য, ধর্ষণ নিউজের কাজে গাইনী বিভাগে গেলে তখন ওইখানে নার্সের হাতে ক্যানোলা লাগানো দেখি। তখন ওই নার্সের সাথে কথা বলে জানতে পারি, তিনি দাঁত ব্যথার সমস্যায় ভুগেছিলেন। নিজের চিকিৎসা নিজেই করছিল, আবার ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা তিনিই দিচ্ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত