ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

যেভাবে পুলিশের জালে সাইফুর-অর্জুন

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:০১

যেভাবে পুলিশের জালে সাইফুর-অর্জুন

সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে নববধূ ধর্ষণের আলোচিত ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও আরেক আসামি অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

রোববার ভোররাতে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে পুলিশ ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহামনকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া এদিন সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্ত এলাকা থেকে মামলার চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছাতক সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বিল্লাল হোসেন জানান, সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান (২৮) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত হয়ে ভারত পালাতে চেয়েছিলেন। এ জন্য রোববার ভোর ছয়টার দিকে তিনি ছাতক নোয়ারাই এলাকায় সুরমা নদীর খেয়াঘাটে যান।

আরও পড়ুন: ভয়াল সেই রাতের বর্ণনা দিলেন ধর্ষিতা বধূ

তিনি বলেন, ‘ছবিতে সাইফুরের দাঁড়ি ছিল। তিনি দাঁড়ি কেটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে খেয়াঘাটে যান। পরনে ছিল টি-শার্ট ও প্যান্ট। ভোরে সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান। হয়তো সীমান্ত এলাকায় গিয়ে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা ছিল। সাইফুরকে পালাতে কেউ সহায়তা করেছেন কিনা, তার খোঁজ করতে ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তার আত্মীয়দের সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

এদিকে আসামি অর্জুন লস্কর গ্রেপ্তারের বিষয়ে মাধবপুর থানা-পুলিশ জানিয়েছে, পুরো অভিযানটি ছিল গোয়েন্দা পুলিশের।

আরও পড়ুন: ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ধর্ষণের ঘটনার পর এমসি কলেজ ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে জকিগঞ্জে নিজের বাড়িতে যান অর্জুন। পরের দিন বিকেলে জকিগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে তিনি জকিগঞ্জের বাড়িতে এক ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। ভাইয়ের সঙ্গে একাধিকবার তার যোগাযোগ করার তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ। সকালে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাধবপুরের মনতলা এলাকায় পৌঁছায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অর্জুনের অবস্থান শনাক্ত করে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মনতলা গ্রামে অর্জুনের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ধর্ষিত তরুণী তার স্বামীকে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজে ঘুরতে আসেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তরুণীর স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য এমসি কলেজের গেটের বাইরে বের হন। এসময় কয়েকজন যুবক তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চায়। এতে তরুণীর স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর শুরু করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে তরুণী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের হোস্টেলে নিয়ে যান এবং ওই নারীকে গণধর্ষণ করে।

আরো পড়ুন- এমসি কলেজে গণধর্ষিতা সেই তরুণী যেমন আছেন​

এসময় তাদের সাথে থাকা ৯০-টি মডেলের একটি গাড়িও ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করেছে। পরে ওই তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে পাঠানো হয়।

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরুণীর শারিরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসাপাতালে উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।

তিনি বলেন, গাইনি বিভাগের এক অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে গৃহবধূর চিকিৎসা চলছে। তিনি শারিরিকভাবে অনেকটা সুস্থ রয়েছেন।

আরো পড়ুন- স্বামীর সামনেই স্ত্রীকে ধর্ষণ করল ছাত্রলীগের কর্মীরা

শনিবার সকালে নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, এমসি কলেজ ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমান, কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, অর্জুন লস্কর ও বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত