ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ

সুযোগ পেলেই ছাত্রীদের ওড়না ধরে টানাটানি করতো রবিউল

  সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:২২

সুযোগ পেলেই ছাত্রীদের ওড়না ধরে টানাটানি করতো রবিউল

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার আসামি রবিউল হাসানকে সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জের মাঝামাঝি এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ইনাতগঞ্জ থেকে রবিউলকে আটক করা হয়।

রবিউল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বড়নগদিপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার আহ্বায়ক ছিলেন তিনি।

পরে রাত সাড়ে ৯টায় রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলী।

হাতে-পায়ে ধরে আকুতি করেছি তবুও মন গলেনি ধর্ষকদের

রাতে তাকে সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার সময় হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম বলেন, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ নির্দেশনা, গোয়েন্দা ও পুলিশ বিভাগের সমন্বিত অভিযানে রবিউলের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। রাত নয়টা থেকে ১০টার মধ্যে শনাক্ত করা স্থান থেকে রবিউল গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি পালিয়েছিলেন উল্টো পথে, অর্থাৎ ঢাকার দিকে। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের পাশের কাজীগঞ্জ বাজারের নিজ আগনা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।

সিগারেট কিনতে যাওয়াই কাল হলো

এমসি কলেজে অধ্যায়নরত দিরাইয়ের এক ছাত্র জানায়, আদাব-সালাম না দিলে শিক্ষার্থীদের মারধর করে আহত করতেন রবিউল। শুধু তাই নয়, মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা ফাঁকা পেলেই নারী শিক্ষার্থীদের ওড়না ধরে টান মারা, মদ-জুয়া, ইয়াবা সেবন ও বিক্রি, বিনা কারণে শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছনা, হোস্টেলে জোরপূর্বক বসবাস, মিল না দিয়ে বন্ধুবান্ধবসহ খাওয়া, হোস্টেলের সিট বিক্রিসহ নানা ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।

দিরাই উপজেলার জগদল ইউপি চেয়ারম্যান শিবলী বেগ জানান, রোববার বিকেলে বড় নগদিপুর গ্রামে রবিউলের বাদিতে যায় র‌্যাব ও পুলিশের একটি যৌথ দল। এসময় বাড়িতে রবিউলের বাবা দেলোয়ার হোসেন ছিলেন না। র‌্যাব ও পুলিশ বাড়িতে থাকা মা সিতারা বেগম ও বোন লিপি বেগমকে রবিউলকে এনে দেবার জন্য চাপ দেন। এক পর্যায়ে মা ও বোনকে আটক করতে চান তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ২৪ ঘণ্টা সময় চান। এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রবিউল আটক হয়।

এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চায় ছাত্রলীগ

স্থানীয়রা জানায়, রবিউলের বাবা দেলোয়ার হোসেন স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত নয়। রবিউলও স্থানীয় কোন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কখনোই কাজ করেননি। কিন্তু সিলেটে তিনি ছাত্রলীগের হয়ে অস্ত্রবাজি করতেন। গ্রাম্য কোন্দলেও তিনি তার আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ হয়ে প্রায়ই অস্ত্রের মহড়া দিতেন। রোববার বিকালেও তিনি বাড়ির পাশের আখিল শাহ্ বাজারের কাছে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। ওখান থেকে সন্ধ্যায় কুশিয়ারা নদী পাড় হয়ে ঢাকায় পালানোর সময় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ এলাকা থেকে রাত ৯ টায় আটক হন তিনি।

এমসি কলেজে গণধর্ষিতা সেই তরুণী যেমন আছেন​

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকালে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার এক দম্পতি। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ৫-৬ জন যুবক জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় দম্পতিকে। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে ১৯ বছরের গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে তারা। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে শাহপরাণ থানা পুলিশ।

এমসি কলেজে ধর্ষণ ঘটনায় ৫ আসামি গ্রেপ্তার

এ ঘটনায় ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে শনিবার সকালে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগীর স্বামী।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত