বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না: নৌ প্রতিমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোন বিতর্ক থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। রোববার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি এবং রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবীবুর রহমান, নারী সম্পাদক রীতা নাহার, সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া।

কার্টনে মিললো নবজাতকের মরদেহ

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে যারা বিতর্ক করে, আমাদের বুঝতে হবে তারা এ বাংলাদেশকে ধারণ করতে পারে না। বাংলাদেশকে ধারণ করতে তাদের পছন্দ হয় না। এ জায়গাটায় আমাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে পথ চলতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আছি। বিভিন্ন লেখকের লেখা পছন্দ করতে পারি। বিভিন্ন সাহিত্যিক আমাদের প্রিয় হতে পারে। নেতৃত্বের পছন্দ অপছন্দ থাকতে পারে। রাজনৈতিক দলের পছন্দ ও অপছন্দ থাকতে পারে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোন বিতর্ক থাকতে পারে না।

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সৃষ্টির সঙ্গে জাতির পিতার যে অবদান তা অনস্বীকার্য। মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় লাভ করা, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। এ জায়গাগুলো সমুন্নত রেখে আমাদের পথ চলতে হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এ রকম একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার। তার উদারতা আমরা কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ গ্রহণ করতে পারি নাই। সেজন্য বাংলাদেশকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, একেক জন রাজনৈতিক নেতা, একেকজন বিশ্লেষক একেক রকম করে বিশ্লেষণ করেন। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পুরো জাতিকে একটি জায়গায় নিয়ে এসেছেন। মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছেন। এবং মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুকে উদার ও মানবতাবাদী নেতা আখ্যা দিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, বিশ্বে এমন কোন দেশ নাই যে, একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধু একদিনের জন্য সশস্ত্র বিপ্লবের কথা বলেন নাই। বঙ্গবন্ধু কোন বিপ্লবী নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামী নেতা। এ সংগ্রামকে তিনি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পরিণত করেছেন। এটি ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বঙ্গবন্ধু কখনো রক্তপাতে বিশ্বাস করতেন না। তিনি মানব হত্যায় বিশ্বাস করতেন না। তিনি উদার এবং মানবতাবাদী একজন মানুষ। সেই মানবতার জায়গা থেকেই বাংলার মানুষ তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল। সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেছিল।

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে বিশ্বে তুলে ধরেছেন মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন। কিন্তু বাঙালিকে জাতি হিসেবে বিশ্বে তুলে ধরতে পারেন নাই। অনেক কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিক অনেকে অনেক কিছু করেছেন। কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিআরইউ কার্যনির্বাহী সদস্য আহমেদ মুশফিকা নাজনীন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজ ও আপ্যায়ন সম্পাদক এইচ এম আকতার।

বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা প্রদর্শনের পাশাপাশি সদস্যদের লেখা বই, প্রয়াত সদস্যদের ছবি, সদস্য সন্তানদের আঁকা ছবি ও ডিআরইউ ২৫ বছরের পথচলার বিভিন্ন ছবিও প্রদর্শনীতে স্থান পায়। উদ্বোধন শেষে নৌ প্রতিমন্ত্রী প্রদর্শনীগুলো ঘুরে দেখেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এনএইচ