ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনায় নৌপথ এক দিনের জন্যও বন্ধ ছিলো না: নৌ প্রতিমন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২০, ২০:০২

করোনায় নৌপথ এক দিনের জন্যও বন্ধ ছিলো না: নৌ প্রতিমন্ত্রী

করোনাকালে অভ্যন্তরীণ নৌপথ এক দিনের জন্যও বন্ধ ছিলো না বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘নদী, নৌপথ ও পর্যটন খাতের বিকাশে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা জানান তিনি।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌ ও সমুদ্র পথে আমাদের পণ্যের সরবরাহ সব সময় গতিশীল ছিল। চট্টগ্রাম বন্দর কোভিডের মধ্যে একদিনও বন্ধ ছিল না। বন্দরে কর্মরত অনেকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। সেখানে কোভিডের সময় বন্দরে এতো বেশি কন্টেইনার জট ছিল, সেটা এনবিআরের সঙ্গে কথা সঠিক পরিকল্পনা মাধ্যমে সমাধান করতে পেরেছি।

নৌপথ সচল ছিল বলেই কোভিড-১৯ এর সময় বাজারে পণ্যের সেই রকম দুষ্প্রাপ্যতা ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, পণ্যের সরবরাহ সব সময় নিশ্চিত ছিল। তবে এটা ঠিক, কিছু-কিছু সময় দুই-একটি পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু পণ্য বাজারে নাই এই রকম ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটে নাই। কোভিডের সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নৌ পরিবহন একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে নৌ পরিবহন কী পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ তা বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে তার ছয় দফার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে হতে হবে নৌবাহিনীর সদর দপ্তর। কয়েকদিনে আগে প্রধানমন্ত্রী সামরিক জাহাজ উদ্বোধন করেছেন। আমাদের সাবমেরিন, ফ্রিগেড আছে। আরো অনেক অত্যাধুনিক জাহাজ যুক্ত হতে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক দুবৃত্তায়নে ট্যুরিজম খাত ধ্বংস করা হয়েছিল দাবি করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন, ট্যুরিজম খাতের উন্নয়নে কাজ করছিলেন তখন তাকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকার যখন এ খাতকে একটি স্বনামধন্য স্থানে নিয়ে গেল, এরপরই রাজনৈতিক দুবৃত্তায়নের মাধ্যমে এ খাতকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে একটি গোষ্ঠী। তারা একের পর এক মুফতি হান্নান, বাংলা ভাই তৈরি করে ট্যুরিজম খাতকে আতঙ্কিত করে তোলে।

তিনি বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে দেশের মধ্যে সিরিজ বোমা হামলা করে দেশকে অন্ধকারে পরিণত করে তুলেছিল। জঙ্গিবাদ কায়েম করা হয়েছিল, তৈরি করা হয়েছিল মুফতি হান্নান, বাংলা ভাইসহ আরো অনেক জঙ্গি। বিচার ব্যবস্থা-আদালতের ওপর বোমা মেরে দেশকে আতঙ্কিত করা হয়েছিল। এ অবস্থায় একটি দেশে কীভাবে পর্যটক আসে? এ খাতকে ধ্বংস করা হয়েছিল।

নদীপথের উন্নয়নের শেখ হাসিনার সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত একনেক সভায় তিনি বলেছেন, নদী উন্নয়নে যেন বেশি বেশি প্রকল্প নেওয়া হয়। এই জন্য তিনি ডেল্টা প্ল্যান করেছেন। নদী ব্যবস্থাপনাটা যদি আমরা সঠিকভাবে না করতে পারি তাহলে দেশকে আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবো। বাংলাদেশ যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আছে, সেখান থেকে যে ৪১ সালে উন্নত দেশে যাবে। তারপর কী হবে? এই জন্য নদীকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

গাড়ির ব্যবসার জন্য একসময় নৌ ও রেলপথের উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হয়েছিল- দাবি করে আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, মহাসড়কগুলোর অবস্থাও খারাপ ছিল। মহাসড়ক মানে হচ্ছে কোনও সিগনাল থাকবে না। বাংলাদেশে কাগজে ছিল মহাসড়ক, বাস্তবে ছিল না। বর্তমান সরকার মহাসড়ক কী জিনিস তা দেশের মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষ রেল কী জিনিস ভুলে গিয়েছিল। সেই রেলের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পণ্য নিয়ে এসেছি। এই যোগাযোগটা শেখ হাসিনার সরকার তৈরি করেছে। অন্যান্য জায়গায়ও আমাদের যোগাযোগগুলো হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে বিআিইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, সব মন্ত্রণালয় এক হয়ে দেশের নদী ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। কর্ণফুলী ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী নদীগুলোর উন্নয়নে মাস্টার প্লান করা হয়েছে যার মাধ্যমে এগুলোকে দখলরোধ ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনার কাজ চলমান আছে। ৪৯৩টি নদীর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩১৭টি, বিআিইডব্লিউটিএ ১৭৮টির উন্নয়ন কাজ করছে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে ছোট নদীর কাজও চলমান আছে। আমাদের টার্গেট আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সব নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা।

শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশিম কুমার দে’র সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল করিম লেবু। বক্তব্য রাখেন নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) ইঞ্জিনিয়ার লুতফর রহমান, সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত