ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘অনুদান নয়, বাবা হত্যার বিচার চাই’

  আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৫৯  
আপডেট :
 ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১৭:০১

‘অনুদান নয়, বাবা হত্যার বিচার চাই’

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা জুয়েলের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিহতের পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন প্রশাসক আবু জাফর।

নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়া এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, যারা আমাকে এতিম করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই। অনুদান নয়, বাবা হত্যার বিচার চাই।

নিহত শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হারিয়ে ফেলেন তিনি।

জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার দায়ে জুয়েল ও তার সঙ্গী একই এলাকার সুলতান রুবায়াত সুমনকে গনপিটুনি দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। পরে সন্ধ্যায় ইউপি ভবন ভেঙে প্রশাসনের উপস্থিতিতে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে স্থানীয়রা।

ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। স্থানীয়দের ছোড়া পাথরের আঘাতে পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মহন্তসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ জুয়েলের সঙ্গী রুবায়াত সুমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এবং ইউপি ভবন ভাঙচুরের দায়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাদী হয়ে পৃথক মামলা দায়ের করেন।

আলোচিত এ ঘটনায় তিনটি মামলায় ১১৪ জনের নামসহ শত শত অজ্ঞাত আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও জেলা প্রসাসনের তদন্ত কমিটি কোরআন অবমাননার কোন সত্যতা পায়নি। এটি মূলত একটি গুজব ছিল বলে তারা দাবি করে।

নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়াকে রোববার দুপুরে ২০ হাজার টাকা অনুদানের চেক প্রদান করেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর। এ সময় জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মোঃ তওহিদুন্নবীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মোঃ তওহিদুন্নবী সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসনের তৎপরতায় আমাদের বিশ্বাস ন্যায়বিচার পাবো। ন্যায়বিচারের অপেক্ষা রয়েছি। তবে দ্রুত বিচারকার্য শেষ করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত