ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

আহলে হাদিস-কওমীর বিরোধে মাদ্রাসা ভাঙচুর

  ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৫৩  
আপডেট :
 ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৩৫

আহলে হাদিস-কওমীর বিরোধে মাদ্রাসা ভাঙচুর

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রকাশ্য দিবালকে মাদ্রাসা ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ডাঙ্গা কামদিয়া গ্রামে প্রায় ২ বছর আগে এই মাদ্রসা তৈরি করেন আহলে হাদিস মতবাদে বিশ্বাসীগণ।

সালথা থানা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে উত্তেজিত জনতা বুধবার সকাল ১০টার দিকে এই মাদ্রাসা ভাঙচুর করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে এই মাদ্রাসা স্থাপন করে সৌদিফেরত প্রবাসী নুরুল আলম (মঙ্গল)। স্থানীয়ভাবে আহলে হাদিস ও কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে আকিদাগত কিছু মতপার্থক্য ছিল। এই মতপার্থক্য নিয়ে আহলে হাদিস মাদ্রসা কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় ওলামা মাশায়েখদের মতবিরোধ চলে আসছিল। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বেশ কয়েকবার এই বিরোধ নিস্পত্তি হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল ১০টায় সালথা থানা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে- এই মর্মে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ উভয় পক্ষকে উপজেলা পরিষদে ডাকে। সেখানে সালিশ বৈঠক হওয়ার সময়ই আহলে হাদিসের মাদ্রসা ভাঙচুর করা হয়।

এ সময় মাদ্রসার দুটি ঘর ও পাশে থাকা নুরে আলম মঙ্গলের একটি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। মাদ্রসায় প্রায় ৪০ জনের মতো শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতো। ঘটনার সময় প্রায় ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে ও সালথা থানা পুলিশের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীডিপ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয় এবং তাদের সবাইকে বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ ঘটনায় প্রায় ১০ লাখ টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা সালথা অঞ্চল) এফএম মহিউদ্দিন, সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাুরকুজ্জামান ফকির মিয়া, বাংলাদেশ মানবধিকার কশিনের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান প্রমুখ।

মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুল আলম মঙ্গল বলেন, আমরা ইউএনও স্যারের সাথে মিটিং করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় কিছু লোকজন উত্তেজিত হয়ে মাদ্রসার দুটি ঘর ভাঙচুর করে এবং আমার একটি বসতঘর গুঁড়িয়ে দেয়। এখানে প্রায় ৪০ জনের মতো শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতো। মাদ্রসা ভাঙচুরের পাঁশাপাশি সবকিছুই এরা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সব মিলে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সালথা উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মওলানা ঝিনাতুল ইসলাম বলেন, সালথা নগরকান্দার ওলামা মাশায়েকগণ সবসময় সোচ্চার। একজন কওমী মাদ্রাসার ছাত্র নগরকান্দায় যাচ্ছিলেন। কামদিয়ায় পৌঁছলে আহলে হাদিসের লোকজন তাকে মারধর ও আটক করে রাখে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তাওহিদী জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের আস্তানা ভাঙচুর করেছে। ভাঙচুরের সময় আমাদের শীর্ষস্থানীয় আলেম কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসিব সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, একটা পক্ষ ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে- এমন দাবি করে এ ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এছাড়া তাদের মধ্যে শরীয়াহ ভিত্তিক কিছু মতপার্থক্যও রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, পুলিশ সংঘর্ষ এড়াতে ও ভাঙচুর বন্ধ করতে তৌহিদী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেছে। এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত