‘মেজর নুর আব্দুল জব্বারকে অমানুষিক নির্যাতন করে’
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১৮:০৬
আলোচনাসভা, মিলাদ ও কেক কাটার মধ্যে দিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক এমপি, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম আব্দুল জব্বারের ৭৫তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়েছে।
আব্দুল জব্বারে স্মৃতি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় কুলাউড়া স্মৃতিসৌধের বিজয় মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মজয়ন্তী। এর আগে সাবেক এ সাংসদের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অশ্রুসিক্ত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন ‘আব্দুল জব্বার কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৪) ছিলেন। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে, আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন উপেক্ষা করে বাংলার গণমানুষের মুক্তির লক্ষে কাজ করে গেছেন।
এ প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আরো বলেন ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ করায় আব্দুল জব্বারকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করে অমানুষিক নির্যাতন করে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা হয়। সেই সময় প্রথমবার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করলে আবারো কুরবানি ঈদের রাতে গ্রেপ্তার হন আব্দুল জব্বার।
জেলের অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধুর প্রধান খুনি মেজর নুর তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। হত্যা করতে উদ্যত হয়। তৎকালীন সেনা অফিসার, পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত প্রয়াত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আমিন আহমেদ চৌধুরী তাকে উদ্ধার করেন।’
সভায় স্মৃতিচারণ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, মরহুম আব্দুল জব্বারের দ্বিতীয় পুত্র ও প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার আবু জাফর রাজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম আব্দুল জব্বারের ছেলে আসম কামরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস পপি ও কুলাউড়ার পৌর মেয়র শফি আলম ইউনুস।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভীনয় ভূষণ রায়, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা শ্রী গৌরা দে, লন্ডন আওয়ামী লীগের তথ্য বিষয় সম্পাদক সাংবাদিক কামাল হাসান, অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমদুদ হোসেন, কাদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, ভাটেরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক, রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামালসহ নানা রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, জাতির পিতার স্নেহধন্য আব্দুল জব্বার ১৯৬২ এর শিক্ষা-আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরবজনক ভূমিকার জন্য ২০২০ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
এদিকে আব্দুল জব্বারের দ্বিতীয় পুত্র বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ এর দায়িত্ব পালন করছেন। তৃতীয় ছেলে আসম কামরুল ইসলাম সাবেক কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন, বর্তমানে কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে