ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪২ মিনিট আগে
শিরোনাম

দুদক কর্মকর্তাদের প্রজ্ঞা আন্তর্জাতিক মানের: চেয়ারম্যান

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৫৯  
আপডেট :
 ২১ নভেম্বর ২০২০, ১৭:০০

দুদক কর্মকর্তাদের প্রজ্ঞা আন্তর্জাতিক মানের
ফাইল ছবি

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আমার দীর্ঘ কর্ম জীবনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তাতে আমার মনে হয়েছে দুদক কর্মকর্তাদের যে প্রজ্ঞা রয়েছে তা আন্তর্জাতিক মানের।

তিনি বলেন, আপনাদের সকলের মননে যদি দুর্নীতিবিরোধী জাগরণ সৃষ্টি করতে পারেন, তাহলে তা দুর্নীতিবিরোধী গণজাগরণে রূপান্তরিত হবে। তাই আসুন, আমরা সবাই শপথ গ্রহণ করি, আমাদের সক্ষমতা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা যা কিছু আছে তা দিয়ে জনগণের কল্যাণে তাদেরকে সাথে নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী গণজাগরণ সৃষ্টি করি।

শনিবার দুদকের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় দুদক চেয়ারম্যান এ মন্তব্য করেন।

বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বই মহাসংকট কাল অতিক্রম করছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এই মহাসংকট কালেও দেশের দুষ্টু চক্রের কালো হাত থেমে নেই। সে কারণেই মাস্ক কেলেঙ্কারি, করোনা টেস্ট জালিয়াতি, ত্রাণ-সামগ্রী আত্মসাৎ, চিকিৎসা জালিয়াতির মতো ঘটনা আমাদের সামনে এসেছে। আমরাও দায়িত্ব পালনে পিছপা হইনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই আমাদের ৭০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনজন প্রতিশ্রুতিশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হারিয়েছি। তারপরও দুর্নীতিপরায়ণদের সুখকর সময় পার করতে দেয়া হচ্ছে না। আমাদের কাজটি ধন্যবাদহীন। এ কারণেই দুর্নীতির মূলোৎপাটনে দেশের সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, রাজনীতিবিদসহ সকলের সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলাম কমিশন সবসসময় গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। কারণ গঠনমূলক সমালোচনাই কর্ম প্রক্রিয়াকে শানিত করে। সঠিক পথ দেখায়। সবাই সবকিছু জানে না, তাই অন্য কেউ যদি ভালো পথ দেখায় তা গ্রহণ করতে আমাদের আপত্তি নাই। আমরা সমালোচনার প্রতি-উত্তর দেই না বরং তা গ্রহণ করি। নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করি।

তিনি আরো বলেন, আমরা আইনি দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তাই আমাদের ঝুঁকি নিতে কোনো ভয় নেই। আমরা ঝুঁকি নিয়েছি। আমরা সবাই সমন্বিতভাবেই ঝুঁকি নিয়েছি। কোনো হুমকি-ধমকি আমাদেরকে আইনি দায়িত্ব পালনে নিবৃত করতে পারেনি। আমরা সবাই একই সমতলে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি।

‘সমাজে কেউই দুর্নীতি চায় না। সমাজের কতিপয় ব্যক্তি দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের সংখ্যা সত্যিই নগণ্য। তাই সমাজের কাছে আমাদের অঙ্গীকার থাকতে হবে। আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে সবসময় বিবেচনায় রাখতে হবে। আমাদের সকলের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী থাকতে হবে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী মানে অপরাধ বা অপরাধীর সাথে আপোস নয়। সকল প্রকার ভয়-ভীতি, লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। সবাই মিলে শেষ দিন পর্যন্ত জনগণের কল্যাণে দুর্নীতি প্রশমন, দমন, প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করবো, এটাই হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।’

আলোচনা সভায় দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষিত হয়েও যারা দুর্নীতি করছেন, তারা জঘন্য অমানবিক অপরাধ করছেন। তাদের মানবিক গুণাবলি নেই বরাং পাশবিক গুণাবলি রয়েছে। সবাই সন্তানদের জজ-ব্যারিস্টার, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি বড় কর্মকর্তা বানাতে চান। এটা ভালো কথা। তবে সন্তানদের মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কাজটিও একই সঙ্গে বাবা-মাকে করতে হবে।

দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত বলেন, লকডাউনকালে যখন সকল অফিস আদালত বন্ধ ছিল,তখনও দুদক মামলা করেছে, আসামি গ্রেপ্তার করেছে। সকল কার্যক্রম ডিজিটালি সম্পন্ন করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির কারণেই দুদকের ৯০ শতাংশেরও বেশি নথি ই-নথির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে।

দুদক চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত অনুবিভাগের মহাপিরচালক সাঈদ মাহবুব খান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুবিভাগের মহাপিরচালক এ কে এম সোহেল, গোয়েন্দা অনুবিভাগের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আক্তার হোসেন, যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুস সায়াদাত প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ভার্চুয়াল এ আলোচনাসভা দদুদকের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যায় ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত