সাতক্ষীরায় ৪ খুন মামলার অভিযোগপত্র দাখিল
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১৬:০৯ আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ২১:৩৮
সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মামলার তদন্তেকারি কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সাতক্ষীরা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক বিলাস মন্ডলের কাছে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখিত আসামি হলেন, রায়হানুর ওরফে রায়হানুর রহমান (৩৬)। তিনি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খলিষা গ্রামের ডাঃ শাহজাহান আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: একই পরিবারের ৪ জনকে জবাই করে হত্যা
সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্তভার পাওয়ার পর একমাস ৮ দিনে ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও আদালতে ১৬৪ ধারায় রায়হানুল ইসলামের জবানবন্দি পর্যালোচনা সাপেক্ষে তাকে একমাত্র আসামি করে আদালতে ৩২৮ ও ৩০২ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসাদুল, রাজ্জাক ও আব্দুল মালেককে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ৪ খুন: আরও তিন আসামি গ্রেপ্তার
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের বড় ছেলে শাহীনুর রহমান মাছ চাষ করেন। মেঝ ছেলে আশরাফ আলী মালয়েশিয়ায় থাকেন। ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান বেকার। বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে তিনি খাওয়া দাওয়া করতেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি স্ত্রী তালাক দেয় রায়হানুর রহমানকে। সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো।
এরই জের ধরে গত ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবি সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (৯) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানাকে (৬) কোমল পানীয়'র সাথে ঘুমের বাড়ি খাওয়ায় রায়হানুর। পরদিন ১৫ অক্টোবর ভোর ৪টার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদের একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় চার খুন: ৫ দিনের রিমান্ডে রায়হানুল
হত্যাকারীরা ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শ্বাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি সন্দেহজনক আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মন্ডলের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে
