ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

বিক্রি বেড়েছে লেপ-তোষকের

  সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৪৫

বিক্রি বেড়েছে লেপ-তোষকের
ছবি: প্রতিনিধি

দেশের উত্তরের জেলা আবার হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা হওয়ায় দিনাজপুরের মানুষ শীতের অনুভূতি একটু বেশি পেয়ে থাকে। কাগজে কলমে হেমন্তকাল শুরু হলেও দিনাজপুরসহ উত্তরের জেলাগুলোতে শীত কিন্তু পড়েই গেছে। সূর্যাস্তের সাথে সাথে শীত পড়তে থাকে। রাত যত গভীর হয় শীতের মাত্রা তত বৃদ্ধি পায়। সন্ধ্যার পর খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাহিরে থাকে না। শীত বৃদ্ধির সাথে সাথে কয়েকদিন ধরে লেপ-তোষকের ব্যবসায়ীরা আর কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছে।

শীতের এই আগাম বার্তার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোষক প্রস্তুতকারী কারিগরদের ফিরে এসেছে কর্মব্যস্ততা। কম্বলের চাইতে লেপের দাম কম ও এটি বেশি আরামদায়ক হওয়ায় ক্রেতারা লেপের দিকেই ঝুঁকছেন বেশি।

দিনাজপুর শহরের চুড়িপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, কারিগররা লেপ-তোষক তৈরিতে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের পাশপাশি ক্রেতা সামলাতেও হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শীত খুব বেশি পড়ার আগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ।

দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ ততই বেশি বাড়ছে। শহর ও গ্রামের মানুষ নতুন নতুন লেপ তৈরি করছেন। বছরের অন্যান্য সময় এসবের বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেশি।

ছবি: প্রতিনিধি

বছরের প্রায় আট মাস অলস সময় কাটে কারিগরদের। এ সময় তাদের কেউ কেউ ব্যস্ত হন ভিন্ন পেশায়। তবে শীত মৌসুমের শুরুতে আবারো ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। এবার লেপ-তোষকের বেশি কেনাবেচায় খুশি ব্যবসায়ী ও কারিগররা।

কারিগর তৈয়ব আলী বলেন, কয়েকদিন ধরে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছি। কারণ শীত যত বেশি পড়বে লেপ-তোষকের চাহিদা তত বেশি হবে। লেপ-তোষক তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হচ্ছে। একজনে একজন কারিগরকে ১০ থেতে ১৫টি লেপ-তোষক তৈরী করতে হচ্ছে। একটা লেপ তৈরি করতে মজুরি পাই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

লেপ-তোষক কারিগর মুক্তর আলী বলেন, বছরের প্রায় আট মাস তেমন বেশি কাজ হয় না। তাই এখন শীত কাল কাজের সুযোগ বেশি, আয়-ইনকামও বেশি। তাই চার মাসের কাজের পারিশ্রমিক দিয়ে আমাদেরকে বাকি আট মাস চলতে হয়।

ছবি: প্রতিনিধি

এ বছর লেপের দাম কেমন হবে জানতে চাইলে মালদহপট্টির ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম বলেন, রেডিমেট লেপের ক্ষেত্রে সিঙ্গেল লেপ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। সেমি-ডাবল লেপ ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, ডাবল লেপ পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে।

কথা হয় দিনাজপুর সদরের সর্দারপাড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিটি লেপ-তোষক বানাতে মজুরি হিসেবে ২০০ টাকা করে খরচ হয়। একজন কারিগর সারাদিন কাজ করলে দিনে ১০টি লেপ তৈরি করতে পারে। প্রতিটি ৪ থেকে ৫ হাত লেপ ১ হাজার ২০০ টাকা ও তোশক ১ হাজার ৩০০ টাকা খুচরা বিক্রি করা হয়।

বিরল উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম জানান, ঠাণ্ডা একটু একটু বাড়ছে, তাই পুরাতন লেপের তুলা বদলিয়ে নতুন কাপড় দিয়ে সেলাই করতে দিয়েছি। ঠাণ্ডা বাড়লে দোকানে ভিড় হবে। তাই ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই লেপ-তোষক গুছিয়ে নিচ্ছি।

দিনাজপুর লেপ-তোষক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, আমাদের লেপ-তোষক দোকানে সারাবছর তেমন বেচাকেনা হয় না। শীতের সময় আমাদের বেচাবিক্রি বেশি হয়। আমাদের এই ব্যবসার সাথে কারিগর থাকে, তাদেরকে মজুরি দিতে হয়। এখন তুলার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। তুলার প্রকারভেদের ওপর দাম কমবেশি হয়ে থাকে। শীতের সময় আমাদের ব্যবসা ভালো হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত