ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

লুটপাট শেষে ভুনা খিচুড়ি খেয়ে উল্লাস!

  শওকত জামান, জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৪৪  
আপডেট :
 ২৬ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৫৩

লুটপাট শেষে ভুনা খিচুড়ি খেয়ে উল্লাস!
ছবি: প্রতিনিধি

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রেখিরপাড়া গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ফিল্মি কায়দায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে লুটতরাজ, শতাধিক বৃক্ষ নিধন ও পুকুরের মাছ লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রকাশ্যে এমন নৈরাজ্য সংঘটিত হলেও উপজেলা চেয়ারম্যানের হুমকি ও অপতৎপরতায় মামলা করতে পারেনি। পরিবারটি ফের হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ঘরবন্দি হয়ে কেউই ৩ দিন ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না বলে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি।

ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিনের ভাই ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী শামছুন্নাহারের নামে কেনা বসতবাড়ির ২৬ শতাংশ জমি নিয়ে স্থানীয় আকরাম হোসেনের সাথে বিরোধ চলছে। বিরোধের জেরে মেলান্দহ উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দিনভর বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। কামরুজ্জামান তার পোষা সন্ত্রাসীদের দিয়ে বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে পুকুরের মাছ লুটসহ শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কেটে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রতিবাদকারীদের ক্রসফায়ারে দেয়ার হুমকি দিলে কেউ এগিয়ে আসেনি। হামলার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান সরকারি গাড়িসহ তার লাইসেন্সকৃত শটগান ব্যবহার করেছেন। দিনভর লুটপাট শেষে রাতে ওই স্থানে শতাধিক লোক নিয়ে ভুনা খিচুড়ি খেয়ে উল্লাস করেছে সন্ত্রাসীরা। থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নিচ্ছে না।

কেটে ফেলা হয় গাছপালা

জমির মালিক শামছুন্নাহারের ছেলে বলেন, ২০০১ সালে বসতবাড়ি, গাছপালা পুকুরসহ ২৬ শতাংশ জমি কিনে নেই। এ জমির খাজনা খারিজ দাখিলা আমাদের কাছে আছে। এই জমির পাশে আকরাম হোসেনের কিছু জমি আছে। আমাদের জমি বেদখল করার জন্য দীর্ঘদির ধরে আকরাম হোসেন পায়তার করে আসছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান তার কথিত শ্বশুর আকরাম হোসেনের পক্ষ নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর তার সন্ত্রাসী বহিনী দিয়ে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যায় বাড়িঘরের সবকিছু এবং বাড়ির আশেপাশের সমস্ত গাছপালা। এ সময় পুকুরের ৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে মাঝি ডেকে সেখানেই বিক্রি করে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতাক্ষদর্শী গ্রামবাসীরাও উপজেলা চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী তাণ্ডবের বর্ণনা দিয়ে বলেন, দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ কয়েকশ' লোক অতর্কিত হামলা চালিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। চিৎকার করে হুমকি দেয় কেউ এগিয়ে এল গুলি করা হবে। ভয়ে আমরা কাছে যেতে পারি নাই।

কেটে ফেলা পুকুরের মাছ বিক্রি করা হয়

ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিনের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন ঘটনার বিচার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তবে অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান টেলিফোনে জানান, বিরোধী জমি নিয়ে আক্রাম হোসেনের পক্ষে আদালতের রায় রয়েছে। তিনি এ নিয়ে সালিশ বৈঠক করেছেন। বৈঠকের সভাপতি হিসেবে তিনি ঘটনাস্থলে দেখতে যান। থানায় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাছ কাটা হয়েছে। কাউকে হুমকি দেয়ার ঘটনা সঠিক না।

খিচুড়ির আয়োজন

এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ওসি এম এম ময়নুল ইসলাম জানান, আমি ৩-৪ দিন হলো যোগদান করেছি। এ সময়ের মধ্যে কোনো অভিযোগ পাইনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত