ঢাকা থেকে শিবালয়ে ডেকে নিয়ে কলেজছাত্রকে হত্যা!
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৩৪ আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৩৬
মানিকগঞ্জের শিবালয়ের ইনতাজগঞ্জে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়ে খুন হলেন কলেজছাত্র তানভির আহম্মেদ (১৯)। তিনি চাঁদপুর সদর পূর্ব মদনা এলাকার শাহীন আলমের ছেলে। বর্তমানে তানভির পরিবারসহ ঢাকার মোহাম্মদপুর কাদেরাবাদ হাউজিং এলাকায় বসবাস করছিলেন। তিনি হাজী মুকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র।
প্রায় দেড় বছর আগে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার কুস্তা গ্রামের সুরুজ খানের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে বিথি আক্তারের পরিচয় হয় তানভির আহম্মেদের। বর্তমানে বিথি আক্তারও স্বপরিবারে মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়া এলাকার বসবাস করছেন।
বিথি আক্তারেরর সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই তাদের মধ্যে প্রেম চলছিল। এর মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে একই এলাকার বিথি আক্তারের ভাগ্নি স্কুল পড়ুয়া মেয়ে সাদিয়া আক্তারের সাথে শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ইনতাজগঞ্জের আজাদুর রহমানের ছেলে রাব্বী হোসেন (১৮) নামের এক যুবকের পরিচয় হয়।
গত প্রায় একমাস আগে সাদিয়ার সাথে দেখা করতে রাব্বী হোসেন তার বসায় (ঢাকার মোহাম্মদপুর) আসেন। ওই সময় সাদিয়া আক্তার রাব্বীর সাথে তানভির আহম্মদকে পরিচয় করিয়ে দেন। তখন থেকে রাব্বীর সাথে তানভির আহম্মেদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
১৫ নভেম্বর দুপুরে তানভিরকে তাদের বসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য ফোন করেন রাব্বী। তানভির ওইদিন দুপুরে ঢাকা থেকে তার রাব্বীর বাড়িতে বেড়াতে যান। ১৮ নভেম্বর বিকেলে রাব্বী বাড়িতে খাওয়া দাওয়া শেষে সন্ধ্যার পর একটি হ্যালোবাইক ভাড়া করে তানভিরকে নিয়ে পাটুরিয়া ঘাট দেখানোর জন্য নিয়ে যান। এ সময় রাব্বী তার এলাকার কয়েকজন বন্ধুকেও সাথে নেন।
যমুনা নদীর তীর দিয়ে ঘোরাফেরার কথা বলে কৌশলে ওইদিন রাতে তানভিরের হাত, পা, ও মুখ বেঁধে দেশীয় অস্ত্র ডেগার দিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে পালিয়ে যান রাব্বী ও তার বন্ধুরা। পরের দিন সকালে নদীর তীর থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে তানভিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে তানভিরের ফোন বন্ধ থাকা ও বসায় ফিরে না যাওয়ায় তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। শিবালয় থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা লাশের ছবি দেখে তানভিরকে চিনতে পারে তার পরিবার। পরে রাব্বীসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন তার বাবা শাহিন আলম।
আজ শুক্রবার এ ঘটনায় জড়িত শিবালয় উপজেলার ইনতাজগঞ্জ এরাকার আজাদুর রহমানের ছেলে রাব্বী হোসেন (১৮), একই উপজেলার ছোট শাকরাই গ্রামের সমিজ মোল্লার শরিফ মোল্লা (১৮), একই গ্রামের ঝড়ু মোল্লার ছেলে নাজমুল ইসলাম (১৮), জালাল মোল্লার ছেলে আজিজুল মোল্লা (১৮), একই উপজেলার পূর্ব ঢাকাইজোরা গ্রামের শামিম শেখের ছেলে হাসিবুল হাসানকে (১৮) গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
খুন হওয়া তানভির আহম্মেদের বাবা শাহিন আলম শুক্রবার বাংলাদেশ জার্নালকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তানভিরকে কৌশলে তার বন্ধু রাব্বী বাড়িতে এনে লোকজন নিয়ে হত্যা করেছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবিরর জানান, তানভিরকে হত্যার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে রাব্বীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে