ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘নবীজীর ম‌ানহানি’ ব‌ন্ধে পৃথক শরিয়া আইন জারির দাবি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২০, ১৭:০০  
আপডেট :
 ২৯ নভেম্বর ২০২০, ১৭:০৫

‘নবীজীর ম‌ানহানি’ ব‌ন্ধে পৃথক শরিয়া আইন জারির দাবি
ফাইল ছবি

নবীজীর ম‌ানহানি ব‌ন্ধে পৃথক শরিয়া আইন জারি করার দাবি জানিয়েছে যুব আনজুমান‌ে আল বাই‌য়্যিনাত। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানীর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র ও জনগণের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, সাংবিধানিক রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম এবং উনার প্রধান হিসেবে প্রাণপ্রিয় রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মানহানির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকরী শরিয়া আইন জারি করা, যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানসহ এ বিষয়ে দ্রুত বিচারের জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল ও শক্তিশালী মনিটরিং সেল গঠন করার পাশাপাশি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে ফ্রান্সের মত মানহানিকর ঘটনা ঘটলে, রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো এবং জনগণের আবেগ-অনুভূতি ও দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো যথাস্থানে বা অভিযুক্ত রাষ্ট্রে পৌঁছে দেয়া এবং এমন অপকর্মের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ফ্রান্সসহ বিশ্বের সকল দেশকে ৪টি নীতি গ্রহণে বাধ্য করতে হবে।

বক্তারা বলেন, সরকারের উচিত এই নীতিগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গন তথা জাতিসংঘ বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রস্তাব আকারে উত্থাপন করা। প্রয়োজনে ওআইসি’র মত ইসলামী জোটগুলোকে সাথে নিয়ে দাবিগুলো উত্থাপন করা।

ছবি: নিজস্ব

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১. পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকতে হবে, ২. পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুভূতিকে সম্মান করতে হবে, ৩. পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুভূতিতে আঘাত করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে জারি করতে হবে, ৪. পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুভূতিকে আঘাত করার এই জঘন্য অপরাধকে আইন করে বন্ধ করতে হবে।

তারা বলেন, ধর্মপ্রাণ জনগণের কাছে রাষ্ট্রের চাওয়া হচ্ছে, প্রাণপ্রিয় নবীর মানহানি রুখতে রাষ্ট্রই যেন দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্র জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় একই অপরাধের বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে এবং তারই প্রতিক্রিয়ায় জনগণ নিজেই মাঠে নেমে তার চাওয়া-পাওয়া পূরণের চেষ্টা করছে।

বক্তারা বলেন, আইন ও বিচারহীনতায় ক্ষুব্ধ মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিলেই সুযোগ পায় বিদেশি সাম্রাজ্যবাদীরা। ‘সন্ত্রাসী তকমা’ দিয়ে রাষ্ট্রের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপের সুযোগ নিতে চায়। কিন্তু যখন রাষ্ট্র নিজেই সু-নির্দিষ্ট ‍ও পর্যাপ্ত আইনের ভিত্তিতে অপরাধী তথা সাংবিধানিক রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম ও প্রাণপ্রিয় নবীর কটুক্তিকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে তখন সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলো কখনই এ সুযোগ নিতে পারবে না।

তারা আরো বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয় ফ্রান্স, ডেনমার্ক-নেদারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ দ্বীন ইসলাম এবং নবীজীর ব্যঙ্গচিত্র অংকন ও মানহানির ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এ রাষ্ট্রগুলো বাক-স্বাধীনতার নামে বাক-আক্রমণকে বৈধ করতে চায়। লক্ষণীয়, ফ্রান্সসহ ১৬টি দেশে বাক-স্বাধীনতা হলোকাস্টের বিরুদ্ধে গেলে, তারা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু তাদের কথিত বাক-স্বাধীনতা যখন ধর্মীয় অনুভূতির বিরুদ্ধে যায়, তখন সেটাকে আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে না।

বক্তারা বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্মকাণ্ডে জনগণের সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা বা চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন দেখা যায়নি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এ নীরব ভূমিকা বাস্তবিকভাবে দেশের জনগণকে চরমভাব, ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে। এমনকি ‘রাষ্ট্রীয় কাজ’নিজ হাতে তুলে নিতে উব্ধুদ্ধ করেছে।

ফ্রান্সের অপকর্মের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সিঙ্গাপুরে প্রবাসীদের মধ্যে এমন ঘটেছে, যার দরুণ চরম বিপদে পড়ে গেছে আমাদের প্রবাসী নাগরিকরা। অনেক প্রবাসী নিরাপরাধ হওয়া সত্ত্বেও তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়ার খবর শোনা যাচ্ছে- বলেও উল্লেখ করেন বক্তরা।

যুব আনজুমানের সভাপতি মুহম্মদ আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন সুমনের উপস্থিতিতে এসময় আলোচনা করেন, যুব আনজুমানের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহম্মদ আমিনুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক সাইয়্যিদ মুহম্মদ নূরুদ্দীন পলাশ, অর্থ সম্পাদক মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দীক হাসান, দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ জিয়াউল হক, মুহম্মদ আবীর ও মুহম্মদ সামদানী প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত