ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

জামায়াতের আমিরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:৩৫  
আপডেট :
 ২০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:২৬

জামায়াতের আমিরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’
জামায়াতের আমিরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের শরীফপুর ইউনিয়নের এক জামায়াত নেতাকে ‌‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’ দিয়েছেন শরীফপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী। আর এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৩১২ মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সরাইলের শিউলী আজাদ।

শনিবার এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে। সংবর্ধিত জামায়াত নেতার নাম মো. তাজুল ইসলাম, তিনি শরীফপুর ইউনিয়ন ‘জামায়াতে ইসলামী’র আমির। তবে একই সাথে তিনি মুক্তিযোদ্ধা বলেও শোনা যাচ্ছে।

জামায়াত আমীরের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কিভাবে এমপি শিউলি আজাদ উপস্থিত ছিলেন তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে এই গণসংবর্ধণা অনুষ্ঠিত হয়।

খোজ খবর নিয়ে যানা যাচ্ছে, শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েক বছর আগে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অপরাধে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা হয়েছিলো। তারপর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে মামলা শেষ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ডা. ফয়েজ আহমদ ফুল মিয়া, এ.কে.এম ছাদির, মো. ছানাউল্লাহ, তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাফ মিয়া। আরো বক্তব্য রাখেন শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. ছায়দুর রহমান বকসি, শরীফপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক তপন, শরীফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. সাজিদুল ইসলাম সাচ্চু মাস্টার ও শরীফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক রায় ভৌমিক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে শরীফপুর ইউনিয়নে ৭৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে ৪৩ জন। আর জীবিত আছেন ৩১ জন। তাদের ৩১ জন ও প্রয়াত ৪৩ জনের পরিবারের হাতে ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এ বিষয়ে সরাইলের আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু ফেসবুকে লিখেন, ‘তাজুল ইসলাম জামাতে ইসলামী শরীফপুর ইউনিয়ন এর আমীর এবং একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এমপি মহোদয়কে অবগত করলে হয়তো এমনটি হতো না।’

শরীফপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা ফাইজুর রহমান তার ফেসবুকে লিখেন, ‘নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক জামায়াতের আমির কে সংবর্ধনা। উনি (চেয়ারম্যান) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ছবি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন, তারপর উনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়। পরে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে মামলা শেষ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়। শরীফপুর ইউপি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

এ বিষয়ে শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ও তার অংগসংগঠনগুলো বিভিন্ন সময়ে মতের অমিল থাকলেও জাতীয় স্বার্থ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা সবাই এক। শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী একটি গণসংবর্ধনার আয়োজন করে একজন জামায়াতের আমীরকে সংবর্ধনা দিয়েছেন, যা নিয়ে সব মহলে নিন্দার ঝড় বইছে। এই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমি তেমন কিছু জানি না, কারণ অনুষ্ঠানের বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেব আমাদেরকে কিছু বলেননি।

যদিও এটি গণসংবর্ধনা, কিন্তু জনগণের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না অনুষ্ঠানে। সেখানে তার পরিষদের কিছু সদস্য ও নিজেদের লোক নিয়েই মূলত অনুষ্ঠানটি করেছেন। আর এমপি শিউলি আজাদ মহোদয় এখানে এসেছেন, তিনিও আমাদের কিছু জানাননি। জনপ্রতিনিধিদের আচরণ এমন হওয়া উচিৎ নয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত