ওয়াজ শুনে ফিরেই দেখলো মায়ের রক্তাক্ত দেহ

গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম চৈতরপাড়া এলাকায় প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার পর বাড়িতে লুটের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের ছেলের দাবি- ওইদিন (শুক্রবার) ওয়াজ শুনে ঘরে ফিরে মায়ের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান তিনি। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত নাজমা বেগম (৫০) স্থানীয় পশ্চিম চৈতরপাড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী মোমেন মির্জার স্ত্রী।

মে মাসে বাংলাদেশ–চীন সামরিক মহড়া, নজর থাকবে ভারতের

কালীগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আহামুদুল কবির জানান, নিহত নাজমা বেগমের স্বামী মোমেন মির্জা সৌদি প্রবাসী। এছাড়াও তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে সুমন (৩০) ও রিপন (২৪) সৌদী প্রবাসী এবং ছোট ছেলে স্বপন (২০) তার মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে থেকে ঘোড়াশালের একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। এবার তিনি এইচএসসি পরীক্ষার (অটোপাস) ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন।

তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে পশ্চিম চৈতরপাড়া এলাকায় প্রবাসী মোমেন মির্জার বসত ঘরে তার স্ত্রী নাজমাকে গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার ছেলেসহ প্রতিবেশীরা। পরে তারা তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাত পৌনে ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ঢাকায় নেয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নাজমা বেগমের মৃত্যু হয়। তার মাথায় ধরোলো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী জানান, 'নিহত নাজমা বেগমের ছোট ছেলে স্বপন (২০) তার নরসিংদীর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে শুক্রবার বিকেলে তাদের বাড়ির ছাঁদে মাদকের পার্টি করার আলামত পাওয়া গেছে। এছাড়াও নাজমা বেগমের কাছে থাকা নগদ প্রায় ৯০ হাজার টাকা লুট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহতের ছেলে স্বপন মির্জা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিম চৈতরপাড়া এলাকায় ওয়াজ চলছিলো। মাকে বলে তিনি ওয়াজ শুনতে চলে যান। রাত পৌনে ৯টার দিকে ওয়াজ মাহফিল থেকে ফিরে ঘরের মেঝেতে মায়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে মা মারা যান।

কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা ইয়াছমিন বলেন, 'নাজমা বেগমের বাড়ির ছাঁদে মাদকের আলামত পাওয়া গেছে। টাকা লুটের ঘটনাও ঘটছে বলে নিহতের স্বজনরা জানিয়েছে। আমরা কয়েকটি সূত্র ধরে ঘটনার তদন্ত করছি। ঘটনাটির সঙ্গে মাদকাসক্ত ছেলে, না-কি অন্যরা জড়িত, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, নিহতের মাথায় ধারলো অস্ত্র ও লোহাজাতীয় দেশিয় অস্ত্রের আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। নিহতের ছেলে স্বপনসহ কয়েকজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে