ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

লালমনিরহাটে সবজি চাষ করে লোকসানে চাষিরা

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৮

লালমনিরহাটে সবজি চাষ করে লোকসানে চাষিরা
ছবি: প্রতিনিধি

করোনা পরিস্থিতির কারণে বাইরে থেকে পাইকারি ক্রেতা না আসা এবং সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন লালমনিরহাটের সবজি চাষিরা। কৃষকরা নিরুপায় হয়ে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামেই স্থানীয় সবজি পাইকারদের কাছে তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করছেন।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামে বেগুন চাষি আজিজার রহমান জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। সেই বেগুন এখন ১৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন। যা বিক্রি করে উৎপাদন খরচে উঠছে না।

সদর উপজেলার ফুলগাছ গ্রামের ফুলকপি চাষি সাঈদুর রহমান জানান, তিনি ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। আট হাজার ৩০০ চারা গাছ থেকে আট হাজার গাছে ফলন এসেছে। খেত থেকে ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের প্রতিটি ফুলকপি তিন থেকে চার টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। অথচ প্রতিটি কপি উৎপাদনেই ব্যয় হয় পাঁচ থেকে ছয় টাকা। ‘গেলো বছর এই সময়ে প্রতিটি ফুলকপি গড়ে ১৩ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। ফলন আসলে ফুলকপি খেতে রাখা যায় না। এবার তাই বাধ্য হয়েই উৎপাদন খরচের চেয়ে কমদামে বিক্রি করছি’ বলেন সাঈদুর রহমান।

আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি গ্রামের ফুলকপি চাষি সুরেশ চন্দ্র মোহন্ত বলেন, সাত বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করে বিপাকে পড়েছি। গত বছর ফুলকপি চাষে লাভবান হওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। করোনার কারণে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থান থেকে পাইকাররা আসছেন না। তাই স্থানীয় বাজারেই কমদামে ফুলকপি বিক্রি করছি। প্রতি বিঘা জমিতে চার থেকে সাড়ে চার হাজার ফুলকপি চারা চাষ করা যায়। এতে খরচ ২০-২৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।’

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা এলাকার কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, মুলা চাষাবাদ করে বিপদে পড়েছি। বাজারে ক্রেতা নেই। ফলে ক্ষেতের মুলা ক্ষেতে পড়ে আছে।

লালমনিরহাট শহরের গোশালা বাজারের সবজি পাইকার আক্কাস আলী বলেন, ‘একসঙ্গে অনেক কৃষক ফুলকপি উৎপাদন করায় স্থানীয় সরবরাহ বেড়ে গেছে অনেক। বাইরে থেকে পাইকার না আসায় আমরা কৃষকদের ফুলকপি কম দরে কিনে কম দরেই বিক্রি করছি।’ প্রতি কেজি ফুলকপি ছয় থেকে সাত টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঢাকার সবজি পাইকার নূর ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা বাইরে যাচ্ছেন না। এছাড়া, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে এ বছর প্রচুর পরিমাণে ফুলকপি চাষ হয়েছে বলে তারা উত্তরাঞ্চল থেকে সবজি কিনছেন না।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামিম আশরাফ বলেন, ‘যেসব কৃষক এক মাসে আগে সবজি তুলতে পেরেছেন, তারা অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন। এখন একসঙ্গে সব কৃষকই সবজি তুলছেন। সে কারণে সরবরাহ বেড়েছে। তাই দামও কম।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত